আর চাষের কোনও আশা নেই। তাই ভেড়ি তৈরি করে হবে মাছ চাষ। শনিবার সিঙ্গুরের গোপাল নগর মৌজা জেসিবি দিয়ে কেটে ১০ বিঘা জমিতে শুরু হয়েছে ভেড়ি তৈরির কাজ। রাজ্য রাজনীতিতে বহু আলোচ্য এলাকা সিঙ্গুর। সেখানে টাটা গোষ্ঠীর ছোট গাড়ি তৈরির কারখানা ঘিরে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি।
তারপর এক দশকেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। বাম সরকারের পতন হয়ে তৃণমূল জমানার সূচনা হয়। অবশ্য এই পরিবর্তনের অন্যতম অনুঘটক ছিল এই সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনই। আদালতের রায়ে জমি ফিরে পেয়েছেন কৃষকরা।
এবার সমস্যা হয়ে দাঁড়াল দীর্ঘ সময়কাল। এতদিনে ন্যানো কারখানা হয়নি। আবার জমিও চাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। তাই সেই জমিকে কাজে লাগাতে উদ্যোগী হলেন স্থানীয়রাই। যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে শুরু হল ভেড়ি তৈরির কাজ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুর থেকে টাটা সরতে বাধ্য হয়েছিল।ক্ষমতায় এসেই কৃষকদের সিঙ্গুরের জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল সরকার। সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতি কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতা দুধকুমার ধারার কথায়, প্রকল্পের মাধ্যমে যাঁদের ৩ বিঘা বা তার বেশি জমি আছে, তাঁদের সরকার পুকুর করে দিচ্ছে। পুকুর খননে খরচ কিছু দিতে হবে না। তেমনই তিন বছর বিনামূল্যে মাছও দেওয়া হবে।
সিঙ্গুরের এক কৃষক বলেছেন, কারখানা হওয়া নিয়ে স্বপ্ন বাস্তব হল না। তাই রোজগারের একটা চিন্তাভাবনা করেছি, সরকারকে বলেছিলাম, সেই অনুযায়ী মাছের ভেড়ি হচ্ছে। আর এক কৃষকের বক্তব্য, জমি চাষের উপযুক্ত হচ্ছিল না। তাই ভেড়ি করার সিদ্ধান্ত। আশপাশের আরও কয়েকজনও মাছের ভেড়ি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আর এই ঘটনা ঘিরে উঠেছে রাজনৈতিক তরজ শুরু হয়েছে। সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল চাষযোগ্য করে জমি ফেরানোর। সেটা রাজ্য করেছে কি? জমি চাষের ব্যবস্থা করতে পারল না। এখন মাটির ব্যবসার ব্যবস্থা করছে সরকার। শ্রমমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্নার অবশ্য দাবি, বিরোধীরা মিথ্যে অভিযোগ করে শুধু শুধু বাজার গরম করার চেষ্টা করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন