বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ইস্তফার দাবিতে বুধবার কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের জেরে ধুন্ধুমারকাণ্ড সৃষ্টি হওয়ায় রক্তাক্ত হয়েছে ১ জন ছাত্র এবং ১ জন নিরাপত্তারক্ষী। তবুও দাবি না মেটা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ জারি রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পড়ুয়ারা।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, কলেজে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেনিয়ম করছেন উপাচার্য। হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে না। এই সমস্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য এদিন বিকেলে তারা উপাচার্যের সাথে দেখা করতে যান। কিন্তু উপাচার্য তাদের সাথে দেখা করেননি। বরং ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশ দেন ছাত্রছাত্রীদের উপর গুলি চালাতে। এই নির্দেশের পর পড়ুয়াদের সাথে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। যার জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস চত্বর। এরপরই উপাচার্যের ইস্তফার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করে ছাত্রছাত্রীরা।
পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, উপাচার্য খারাপ ব্যবহার করে সবসময়। বিশ্বভারতীতে সুস্থ স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। উপাচার্য দীর্ঘ ৪ বছর ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে সেভাবে যোগাযোগই করেননি।
আন্দোলনরত এক পড়ুয়ার কথায়, আমরা যখন ওঁনাকে (উপাচার্য) আমাদের দাবিগুলি জানাই তখন উনি প্রথমে নিজের নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে ছাত্রদের মারধর করেন। তারপর ফের আমরা কথা বলতে চাইলে, উনি নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশ দেন আমাদের উপর গুলি চালাতে।
যদিও ছাত্রদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি পাল্টা জানিয়েছেন - পড়ুয়ারা তাঁকে হেনস্থা করেছে! তাঁকে গালাগালি দিয়েছে! তাঁর কাছে সব প্রমাণ আছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের রামগড়ে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মোতাবেক জানা গেছে, ইতিমধ্যেই অধ্যাপকদের রামগড়ে গিয়ে ক্যাম্পাসকে দাঁড় করানোর যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন