‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি’, মৃত্যুর ১১ দিন আগে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের চিঠি দেন পূর্ণিমা কান্দু!

People's Reporter: অন্যদিকে, ময়নাতদন্তে পূর্ণিমার পাকস্থলীতে ‘ক্ষতিকারক পদার্থ’ মিলেছে বলে জানা গেছে। ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পূর্ণিমা কান্দু
পূর্ণিমা কান্দু ছবি - সংগৃহীত
Published on

মৃত্যুর ১১ দিন আগে নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের চিঠি দিয়েছিলেন ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু। গত ১ অক্টোবর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপারকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছিলেন ‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি’। অন্যদিকে, ময়নাতদন্তে পূর্ণিমার পাকস্থলীতে ‘ক্ষতিকারক পদার্থ’ মিলেছে বলে জানা গেছে।

গত শুক্রবার পুরুলিয়ার ঝালদার বাড়ি থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মৃত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুকে। তৎক্ষণাৎ ঝালদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের সদস্যরা খুনের অভিযোগ তোলেন। পূর্ণিমার দেহ পাঠানো হয় ময়না তদন্তে। পাশাপাশি, যে ঘর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ঘরটি সিল করেছে পুলিশ। ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পূর্ণিমার মৃত্যুর পরেই প্রকাশ্যে আসে তাঁর লেখা চিঠি। যেখানে তিনি স্বামী তপনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের লিখেছিলেন, তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়। কিন্তু তাঁরা কেউই নিরাপত্তি দেয়নি। পরে তাঁদের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন পূর্ণিমা।

চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ঝালদার বাড়িতে আমি আমার নাবালক পুত্র এবং কন্যার সঙ্গে থাকি। পরিবারে কোনও পুরুষ সদস্য নেই। আমি বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়েছি যে, আমার স্বামীর খুনে অভিযুক্তেরা আমাকে এবং আমার পরিবারকে ‘টার্গেট’ করতে পারে। অভিযুক্তেরা জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে আমরা ভীত। আমাকে এবং আমার পরিবারকে যদি নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তা হলে বাধিত থাকব।“

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ১৩ মার্চ ঝালদা-বাঘমুন্ডি রাস্তায় গোকুলনগরের কাছে সন্ধ্যাভ্রমণে বেরিয়েছিলেন সদ্য জেতা কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। সেসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে প্রবেশ পূর্ণিমার। ঝালদা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন তিনি। সে সময় ঝালদা পুরসভার উপ পুরপ্রধানও হন তিনি। পূর্ণিমার অভিযোগের ভিত্তিতেই সিবিআই তদন্ত শুরু করে। গ্রেফতার করা হয় সাতজনকে। কান্দু পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশ কয়েক জন ইতিমধ্যেই জামিনে মুক্ত। তার পর থেকে আশঙ্কায় ছিলেন পূর্ণিমা।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in