রামপুরহাট গণহত্যার প্রায় আড়াই দিন পর ‘অভিশপ্ত’ বগটুই গ্রামে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নিহতদের পরিবারকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে এক লক্ষ টাকার চেয়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তুলে দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বকটুইকান্ড নিয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে প্রশ্ন তুললেন, 'সকাল থেকে যে দলের সম্পদ ছিল সে আপদ হল কী করে?' বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর আগে সরকারি হাসপাতালে যাওয়া উচিৎ ছিল। যাঁরা চিকিৎসাধীন, তাঁদের দেখতে যাওয়া উচিৎ ছিল। তার বদলে তিনি দু’পক্ষকে মিটমাট করে নিতে বলেছিলেন।'
বগটুইয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে খাপ পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেন সেলিম। তিনি বলেন - 'মুখ্যমন্ত্রী গোটা রাজ্যে বিলি-বাটোয়ারা করে খাপ-পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা লাটে তুলে উনি কেস সাজাতে বলছেন, আর কেমনভাবে সাজাতে হবে সেটাও বলে দিচ্ছেন। যে অসহায় মহিলারা ওখানে ইনসাফের কথা বলতে চেয়েছিলেন তাদের মুখে চেক সেঁটে উনি মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, 'আনারুল খারাপ কারণ পুলিশ পাঠায়নি। কিন্তু প্রথমে এসপির কান ধরে বের করে দেওয়া উচিত। ব্লক সভাপতি সব ঠিক করছেন, পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন।' সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন - ‘উনি আগে অনুব্রতদের কন্ট্রোল করতেন। এখন অনুব্রতরাই ওনাকে কন্ট্রোল করেন। আগে উনি গুণ্ডা কন্ট্রোল করতেন। এখন গুণ্ডারাই তাঁকে কন্ট্রোল করেন। কারণ হাজার হাজার তোলাবাজ। দেউচা পাচামি দেখিয়ে, আদিবাসীদের তাড়িয়ে আদানিদের থেকে যে টাকা আনবেন তার জন্য় এখন থেকে জিভে জল পড়ছে।’
পুলিশি ব্যবস্থাকে নিশানা করে সেলিমের অভিযোগ, পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর এখন কিছু দালালকে সরকারি তকমা দিয়ে পুলিশের কাজ চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বগটুইয়ের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের একাংশের যে গাফিলতি হয়েছে, সেই অভিযোগ তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর কথায় - 'এসডিপিও ঘটনা দেখেও কোনও ব্যবস্থা নিলেন না কেন? এখানে আগেও এমন ঘটেছে। কিন্তু এসডিপিও, আইসি, ডিআইবি দায়িত্ব পালন করেননি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন