নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের রকেট গতিতে উত্থানের রেকর্ড ট্রাক (খোঁজ) করছে ইডি (ED)।
ইডি সূত্রে খবর, ২০১২ সাল পর্যন্ত হুগলি জেলায় জমির দালালি করতেন কুন্তল ঘোষ। এসময় পর্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন কুন্তল। এলাকায় কোনও রাজনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন না তিনি। তবে, তাঁর জীবনের মোড় ঘোরে ২০১২ সালের শেষের দিকে, যখন তিনি একটি স্কুল খোলেন। যেটি এখন ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আর, এই ট্রাস্টি বোর্ডে রয়েছেন ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা।
ওই সময়, হুগলি জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যিনি বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতিতে ইড হেফাজতে রয়েছেন। পার্থ বাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কুন্তল ঘোষের। সেখান থেকেই শুরু হয় কুন্তলের উত্থান, এমনটাই মনে করছে ইডি।
জানা গেছে, পার্থর সাথে আলাপের কিছু সময় পরে, একটি ডিএলএড (D.El.ED) কলেজ খোলেন কুন্তল। আর, এই কলেজকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে 'বেআইনি লেনদেনের' নয়া লাইন। সরকারি স্কুলে শিক্ষককতার চাকরি পেতে এবং মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করতে ইচ্ছুক অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য এই কলেজই হয়ে ওঠে নতুন ঠিকানা।
এক ইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, 'আর্থিক কেলেঙ্কারির জন্য অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই হিসেবি বলে মনে হয়েছে কুন্তলকে। সেই জায়গাগুলিতেই টাকা খরচ করেছে, যেখান থেকে বহুগুণ লাভবান হতে পারবেন তিনি। তাই, ডিএলএড (D.El.ED) কলেজ পরিকাঠামো উন্নতির জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছেন তিনি। যাতে, শিক্ষকতার চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে কলেজের সাফল্যের প্রচার করা যায়। এটি এমন আরও প্রার্থীদের আকর্ষণ করার জন্য করা হয়েছিল, যারা চাকরি পাওয়ার জন্য অর্থ প্রদান করতে ইচ্ছুক ছিলেন।'
একই সময়ে, কেলেঙ্কারির অর্থ অন্যত্র বিনিয়োগ করা উচিত বলে মনে করেছিলেন ধৃত তৃণমূল যুবনেতা। তাই, বিনোদন জগতে ব্যবসার জন্য পার্টনারশিপে ফার্ম খুলেছিলেন কুন্তল। যেটি বাংলায় ওটিটি ওয়েব-সিরিজ নির্মাণ করত। এছাড়া, কলকাতার উপকণ্ঠে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় কুন্তল ঘোষ প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন বলে, ইডি সূত্রে জানা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন