চার পুরসভায় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি কার্যত উড়ে গেছে। আর বিজেপির এই পরাজয়ের পর রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্বকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করলেন সদ্য বিজেপি থেকে বহিষ্কার হওয়া জয়প্রকাশ মজুমদার। সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের পদত্যাগের দাবি তোলেন তিনি।
আজ বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগর এবং শিলিগুড়ি পুরসভার ফল ঘোষণা হয়েছে। চারটি পুরসভাতেই ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী হয়েছে শাসকদল বিজেপি। বিধাননগর এবং চন্দননগরে বিজেপি একটিও ওয়ার্ড জিততে পারেনি। শিলিগুড়িতে ৫টি এবং আসানসোলে ৭টি ওয়ার্ডে জিতেছে বিজেপি।
পুরসভার ফল প্রকাশের পরই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন সম্প্রতি বিজেপির সাথে ক্রমশ দূরত্ব বাড়তে থাকা জয়প্রকাশ মজুমদার। সেখানে দলের রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে একের পর এক শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন তিনি। প্রথমে ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি অর্জুন সিংকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "বিধানসভা ভোটে উনি ব্যর্থ। তাঁকেই দেওয়া হলো বিধাননগর উপনির্বাচন পরিচালনা করতে। রেকর্ড ভোটে হারালেন দলকে। তারপর তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হলো কলকাতা পুরসভা নির্বাচন দেখভালের। আবার রেকর্ড ভোটে বিজেপিকে হারালেন তিনি। সাতটা থেকে বিজেপি নেমে এলো তিনটি আসনে। তাঁকেই আবার দেওয়া হলো বিধাননগর পুরভোট পরিচালনার দায়িত্ব। উনি তো নিজের আত্মীয়দের তৃণমূলে পাঠিয়ে রাস্তা তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলেন।"
রাজ্য বিজেপির প্রধানমন্ত্রী মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে আক্রমণ করে জয়প্রকাশ বলেন, "পুরভোটের ফল প্রকাশের পর সাংবাদিক বৈঠক করবেন মুখ্য মুখপাত্র। সেখানে সাহিত্য বলবেন তিনি। থাকবে বহুত্ববাদ, বহুদলীয় ব্যবস্থার কথা, যা সাধারণ মানুষের বোধগম্য হবে না। বক্তব্যের শুরু কোথায়, শেষ কোথায় কেউ বুঝতে পারবেন না। এরপর চক্রান্ত আর সন্ত্রাসের কথা জুড়ে দেওয়া হবে।"
তাঁর দাবি, রাজ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাস নতুন নয়। এরই মাঝে বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। কিন্তু যাদের জন্য বিজেপি ভালো ফল করেছিল, তাদের একঘর করে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগের অজুহাত তুলে হারের দায় থেকে রাজ্য বিজেপি পার পেতে পারে না বলে দাবি জয়প্রকাশের।
তিনি বলেন, "অসহায় মজুমদার (রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার), ভার্চুয়াল চক্রবর্তী (অমিতাভ চক্রবর্তী), ট্যুইটার মালব্য (অমিত মালব্য) - আপনারা বসে বসে ঠিক করুন এই পরাজয়ের দায় মাথায় নিয়ে কে কে পদত্যাগ করবেন। ভোটের ফল ভালো হলে তো আপনারা কৃতিত্ব নিতেন। হারের দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন।"
নিজের বহিষ্কার নিয়ে তিনি বলেন, "বেআইনিভাবে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। হাতের তালুর মতো চিনতাম বিজেপিকে। আট বছর সময় দিয়েছি বিজেপিকে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন