পরিস্থিতি 'নিয়ন্ত্রণে' থাকলেও সোমবার রাত থেকে ফের অশান্ত হয়ে ওঠে রিষড়ার একাংশ। যার জেরে উত্তরবঙ্গে জি ২০ বৈঠক স্থগিত রেখেই কলকাতায় ফিরে এলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কলকাতায় ফিরেই দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে কলকাতা বিমান বন্দরে নেমে রাজভবনে যাওয়ার বদলে সোজা রিষড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাজ্যপাল। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "আমরা সবাই জানি পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েকদিন ধরে কী চলছে। সমস্ত মানুষের শান্তিতে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার কেউ যদি নষ্ট করতে চায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সাধারণ মানুষের স্বাধীনতায় কোনো হস্তক্ষেপ করতে দেবো না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়তজাওা।"
রিষড়ায় পৌঁছানোর পর তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষের সাথেও কথা বলেন। তবে সূত্রের খবর, আরও বেশি মানুষের সাথে কথা বলার পরিকল্পনা ছিল রাজ্যপালের, এবং বিশেষ কোনো কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। ওই স্থানের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের সাথে কথা বলে এলাকায় শান্তি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বলেন, "আমি পরিস্থিতি দেখলাম। পুলিশকে বলেছি যে সকল দুর্বৃত্তরা হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। কোনও ভাবেই দুষ্কৃতিদের মদত দেওয়া হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠা হবেই।"
পাশাপাশি তিনি রিষড়া স্টেশনের পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখেন রাজ্যপাল। রেল পুলিশের আধিকারিকদের সাথে প্রায় ১০ মিনিট বৈঠক করেন তিনি। যাত্রীদের সুরক্ষার ওপর নজর দিতে বলেছেন সি ভি আনন্দ বোস।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবার রিষড়ায় রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ১২ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল রাত ১০টায় ফের পরিস্থিতির অবনতি হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হঠাৎই বোমার আওয়াজে কেঁপে ওঠে রিষড়ার ৪ নম্বর রেল গেট সংলগ্ন এলাকা। বিস্ফোরণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রেল গেট। একাধিক দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশের গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ট্রেন লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। অশান্তির ফলে হাওড়া থেকে বহু ট্রেন ২-৩ ঘন্টা দেরিতে চলে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন