ছাত্র নেতা আনিস খান হত্যার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচার পায়নি তাঁর পরিবার। ছেলের মৃত্যুর বিচার পেতে এবার পঞ্চায়েত ভোটে লাল ঝাণ্ডা হাতে প্রচার করছেন সালেম খান (মৃত আনিস খানের বাবা)। না, তিনি প্রার্থী নন। কিন্তু তাঁর এলাকায় সিপিআইএম প্রার্থীর সমর্থনে জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছেন সালেম খান।
পরিবারের অভিযোগ ছিল তাদের ছেলেকে পুলিশ খুন করেছে। সেই অভিযোগে তারা বিচারের আশায় ছুটে গিয়েছিল হাইকোর্টে। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। সালেম খান জানাচ্ছেন, এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর লড়ার কথা থাকলেও তিন লড়েননি। বরং আমতা ২ নম্বর ব্লকের কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম প্রার্থীর হয়ে প্রচারে ময়দানে নেমেছেন তিনি।
সালেম খান বলেন, 'আমার ছেলের খুনীদের শাস্তি চাই। শাসক দল পুলিশকে দিয়ে খুন করিয়েছে। কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে চোরদের তাড়াতে এবং আনিসের বিচারের জন্য এই লড়াইয়ে নামা। সবক'টি আসনেই আমরা জিতে পঞ্চায়েত চোরদের হাত থেকে মুক্ত করবো।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রচারে আমাদের মূল দাবি থাকছে, যে কাজগুলো তৃণমূল করেনি সেগুলো আমরা সম্পূর্ণ করবো। ওরা চাইছে ভয় দেখিয়ে, আতঙ্ক তৈরি করে সমস্ত ভোট লুঠ করতে। এমনকি পঞ্চায়েতের পর আমার আর আমার ভাইয়ের বাড়ি ভেঙে তৃণমূলের পার্টি অফিস করার হুমকিও দিয়েছে। কিন্তু আমরা লড়াই থেকে পিছু হটবো না'।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আনিসের বাবা প্রার্থী না হলেও সিপিআইএম-র টিকিটে লড়ছে আনিসের দাদা সামসুদ্দিন খান এবং মামা সাবির হোসেন খান। সামসুদ্দিন খান পঞ্চায়েত সমিতির ৪২ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছেন। আর আনিসের মামা কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৬ নম্বর বুথের প্রার্থী। এই পঞ্চায়েতে মোট ১৪টি আসন। ১৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বামেরা এবং ১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রস। মূলত বাম-কংগ্রেস ও আইএসএফ একজোট হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে।
আনিসের প্রতিবেশীরা বলেন, নির্বাচনের আগে তৃণমূলের তরফ থেকে হুমকি দেওয়া হয় তাঁদের। কেন্দ্রীয় বাহিনী এলে নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারবে তাঁরা। রাজ্য পুলিশের ওপর ভরসা নেই তাঁদের। পুলিশ তৃণমূলের হয়েই কাজ করে। ভয় দেখালেও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে যাবেই তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যু হয় আনিস খানের। বামেরা প্রথম থেকেই আনিসের খুনের বিচার চেয়ে পরিবারের পাশে রয়েছে। কলকাতায় আনিস খানের খুনের বিচার চেয়ে ইনসাভ সভাও করেছিল তারা। আদালতের নির্দেশের পর পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল চার্জশিট তৈরি করে। ওই চার্জশিটে নাম রয়েছে আমতা থানার তৎকালীন ওসি, এএসআই, একজন হোমগার্ড এবং দু'জন সিভিক ভলেন্টিয়ারের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন