সন্দেশখালি কাণ্ডে টাকার বিনিময়ে মিথ্যা বয়ান দিয়েছেন নির্যাতিতা মহিলারা। এমনকি সবার প্রথম মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন রেখা পাত্র! সন্দেশখালির বিজেপি মণ্ডল সভাপতির ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। (এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার) এমনকি পুরো ঘটনার পেছনে 'মাস্টারমাইন্ড' হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়েছেন ওই মণ্ডল সভাপতি।
লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালি ইস্যু রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ সহ একাধিক অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মহিলারা। গ্রেফতার হয়েছেন মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানও। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে সমস্ত ঘটনাই নাকি সাজানো ছিল, টাকার বিনিময়ে করা হয়েছিল।
শনিবার প্রকাশ পাওয়া ভিডিওটিতে এক ব্যক্তিকে এই বিষয়ে বলতে দেখা গিয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম গঙ্গাধর কয়াল, যিনি সন্দেশখালি দু’নম্বর মণ্ডলের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি পদে রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। আলোআঁধারি ঘরের মধ্যে চেয়ারে বসে রয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে ক্যামেরার অন্যদিকে থাকা এক ব্যক্তি প্রশ্ন করছেন এবং তিনি উত্তর দিচ্ছেন।
ভিডিওর এক পর্যায়ে প্রশ্নকারী ব্যক্তি বলেন, দাদা, তুমি জানো তোমরা কী লেভেলের কাজ করেছ! ধর্ষণ হয় নাই। তাকে ধর্ষণ বলে চালিয়েছ! তোমার বাড়ির বৌকে দিয়ে এই কাজ করাতে পারতে? আমরা তো পারব না। দাদা সেখানে বাইরের লোক হয়ে তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। কী ভাবে ওঁদের ব্রেনওয়াশ করলে?
উত্তরে গঙ্গাধর বলেন, শুভেন্দুদার নির্দেশেই আমরা এই কাজ করেছি। উনি আমাদের সাহায্য করেছেন। শুভেন্দুদা বলেছেন, এটা না করলে, তাবড় তাবড় লোকদের গ্রেফতার করানো যাবে না। আমরাও ওখানে দাঁড়াতে পারব না।
ভিডিওতে গঙ্গাধর আরও বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর পিএ পীযূষ এবং ন্যাজাৎ-র বিজেপির কনভেনর শুভঙ্কর গিরি এই ঘটনাগুলি দেখাশোনা করতেন। এরাই আমাকে দিয়ে কাজ করাতেন। তবে কোনো মহিলা না বলেনি। আমরা যেমনভাবে বলতাম সবাই তেমন করতেন। সবার প্রথম অভিযোগ করেছিল রেখা পাত্র। তারপর একে একে সকলে অভিযোগ করতে থাকে। টাকা দেওয়া হয়েছিল সকলকে। শুভেন্দু অধিকারী শুভঙ্কর গিরির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছিলেন।
এই ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে তেমন কেউ প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ভিডিওটি এখনও দেখা হয়নি। পুরো বিষয় না জেনে কোনো মন্তব্য করবো না।
তবে মুখ খুলেছেন গঙ্গাধর কয়াল। তিনি জানিয়েছেন ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তি তিনিই, তবে তাঁর কণ্ঠস্বর প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বিকৃত করা হয়েছে।
অন্যদিকে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা আন্দোলনকারী রেখা পাত্র জানিয়েছেন ভয় দেখিয়ে গঙ্গাধর কয়ালকে দিয়ে এই ভিডিও করানো হয়েছে।
বসিরহাটে নির্বাচন এখনও বাকি আছে। তার আগে ভাইরাল ভিডিওকে হাতিয়ার করে বিজেপির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তৃণমূল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন