কোভিডের বর্তমান সংকট এবং উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আবার সক্রিয় হচ্ছে "রেড ভলান্টিয়ার্স"- এর সদস্যরা। এই রেড ভলান্টিয়ার্সরা মূলত সিপিআইএম-এর ছাত্র যুব সংগঠনের সদস্যের নিয়ে তৈরি। এক বছর আগে করোনার প্রথম ঢেউ এর পরে যে লকডাউন হল দেশজুড়ে তখন বাংলায় এই রেড ভলান্টিয়ার্সদের কাজ করেতে দেখা গিয়েছিল। শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে শুরু করে করোনা রোগীদের খাবার কিংবা ওষুধ সরবরাহ - বেশ সক্রিয় হয়েছিল তারা। এবার করোনা দ্বিতীয় ঢেউ আসতেই আবার কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে তারা। রীতিমত জেলা ভিত্তিক টিম বানিয়ে ফেলছে ধীরে ধীরে। অক্সিজেন সিলিন্ডারে খোঁজ, হাসপাতালে ভর্তি কিংবা ওষুধ সরবরাহের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
দক্ষিণ হাওড়া জগাছা গার্লস হাইস্কুলের পাশেই বাড়ি কৌশিকী দত্তচৌধুরীর। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া তিনি। তাঁর মা কোভিড আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তিনি যোগাযোগ করেন দক্ষিণ হাওড়ার রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যদের সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়। শুধু তাই নয়, বাড়িতেই অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তনুময় দত্ত, সুভাষ দে'রা। তাঁদের কাছে পিপিই কিট ছিল না। শুধু মাস্ক পরেই তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলেছেন। ডিওয়াইএফআই কর্মী সুভাষ দে বলেন, গত তিনদিনে আমরা দক্ষিণ হাওড়ার ছ'টা ওয়ার্ডে ৭ জন করোনা রোগীর বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমরা খোঁজ রাখছি কোথায় ফাঁকা সিলিন্ডার রয়েছে। আমরাই রিফিলিংয়ের ব্যবস্থা করে নিচ্ছি।
দক্ষিণ হাওড়ার ষষ্ঠীতলার বাড়িতে একাই থাকেন বিকাশ চক্রবর্তী, সঙ্গে বৃদ্ধা স্ত্রী। তিনি ফোন করে জানান, যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে একটা বেডের ব্যবস্থা করতে হবে। সুভাষবাবু জানান, ছ'টা হাসপাতাল ঘুরেও বেড পাওয়া যায়নি। তবে প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন বেডের ব্যবস্থা করতে পারলেই জানিয়ে দেওয়া হবে। রেড ভলান্টিয়ার্রসদের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ উপচে পড়ছে মানুষের কাতর আবেদনে। কেউ অক্সিজেন সিলিন্ডার, কেউ হাসপাতালের বেড, কেউ বাড়ি স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাচ্ছেন।
একই অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের রেড ভলান্টিয়ার্স গ্রুপেরও। সোমবার রাত একটা নাগাদ এসএফআইয়ের সংগঠন সন্দীপ আচার্যকে ফোন করে এলাকার বাসিন্দা শুভঙ্কর দাস জানান, তাঁর বাবা করোনা আক্রান্ত। অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে একটা বেডের ব্যবস্থা করতে হবে। ওই রাতেই অ্যাম্বুলেন্স করে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 'আমার নম্বরটি হেল্পলাইন নাম্বার আমাদের কর্মীরা ১০০ শতাংশ উজাড় করে মানুষের সেবার কাজে ব্রতী হয়েছেন।' বললেন সন্দীপবাবু।
অন্যদিকে যথাসময়ে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া যাওয়ায় ৩০০টি ওলা উবের ট্যাক্সি নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটু।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন