করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিনিয়তই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। হাসপাতালে বেড নেই। পর্যাপ্ত অক্সিজেনও নেই। এই সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলা করার বদলে রাজ্য এবং কেন্দ্র উভয়েই মেতে উঠেছে পারস্পরিক দোষারোপের হয়ে খেলায়। কে কিভাবে বঙ্গ দখল করবে, তারা তা নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু চুপ করে বসে নেই বামেদের গণ সংগঠন রেড ভলান্টিয়ার্স। মানুষের পাশে দাঁড়াতে পথে নেমে পড়েছে তারা।
গতবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে সরকার পথে নামেনি, রাস্তায় নেমে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল এই বামেরাই। মাস্ক, স্যানিটাইজার থেকে শুরু করে খাবার বিতরণ করা হয়েছে তাদের উদ্যোগে। এক বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। বরং হাত গুটিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকারও। যেসব জেলায় ভোট হয়ে গিয়েছে, সেখানে আরও একবার তাঁরা পথে নামল। এক বছর পেরিয়েও গরিবদের খাবারের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন যাদবপুরে জ্যোতিদেবী শ্রমজীবী ক্যান্টিন।
রাতবিরেতে অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করা থেকে শুরু করে করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা- সবেতেই এগিয়ে এসেছে রেড ভলান্টিয়ার্স। বাড়ি বাড়ি ফোন নাম্বার দিয়ে আসছেন ছাত্র-যুব কর্মীরা। সরকারি হেল্পলাইনে যোগাযোগ করা না গেলেও তারা আছেন সবসময়ের জন্য।
বৃহস্পতিবার রাতে পর্ণশ্রী এলাকায় এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রয়োজন অক্সিজেন। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা অনেক চেষ্টা করেও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে পারেনি। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী নীহার ভক্ত। বেহালার বিভিন্ন ওয়ার্ডে হাতে লেখা পোস্টার সাঁটিয়ে যাচ্ছেন ছাত্র-যুবরা।
এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর খবর মিলছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার গাফিলতিতে। জেলার দাসপুর, সবং, পিংলা, ঘাটাল, কেশপুরের পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কোয়ারান্টাইন সেন্টারের ব্যবস্থা করতে বিডিওর কাছে ডেপুটেশন দিয়েছেন ছাত্র যুব কর্মীরা।
দার্জিলিং জেলায় সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে সবসময় পাশে থাকবে বামেরা। সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানাল জেলা বামফ্রন্ট। হ্যান্ডবিল বিলি করে মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় সরকারের দায়বদ্ধতার অভাবের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ডিওয়াইএফআই শিলিগুড়ি দক্ষিণ-পূর্ব লোকাল কমিটি। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে বাইরে প্ল্যাকার্ড হাতে সরব হয় তারা।
অন্যদিকে, জলপাইগুড়িতে চা শ্রমিক, অটো-টোটোচালকের মতো অসংগঠিত শ্রমজীবীদের বিনামূল্যে টিকা দিতে হবে। এমন দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্মারকলিপি জমা দেয় শ্রমিক সংগঠনগুলো। পাশাপাশি নাগরাকাটায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগ নেন ভলান্টিয়াররা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন