দেউচা-পাঁচামীতে প্রস্তাবিত কয়লা খনি প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ালো সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (SKM)। খনির জন্য কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি দখল করে তাঁদের 'ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ' গ্রহণ করতে বাধ্য করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ তুলেছে মোর্চা।
কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন মোর্চা মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে বলেছে, 'পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার দেউচা-পাঁচামী-হরিণশিং-দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় একটি খোলামুখ কয়লা খনির জন্য কৃষকদের তাদের কৃষিজমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য জোর করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই কৃষকদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ সাঁওতাল আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। এছাড়াও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীর কৃষকের সংখ্যাও বেশ উল্লেখযোগ্য। খনির জন্য জমি দখলের জন্য রাজ্য সরকার কোনো আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি বলে জানা গেছে। গ্রামসভা আয়োজন করে খনি প্রকল্পের বিশদ বিবরণ, গ্রামবাসীদের অনুমতি নেওয়া, পুনর্বাসন প্যাকেজ সম্পর্কে বলা - কিছুই করেনি রাজ্য সরকার।'
মোর্চার অভিযোগ, কৃষকদের সম্মতি পাওয়ার জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা একটি গোপন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে। কয়েকজনকে আগে থেকে চিহ্নিত করে কেবল তাঁদের কাছ থেকেই সম্মতি আদায় করা হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। খনির বিরুদ্ধে কৃষকদের গণতান্ত্রিক এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর নির্মমভাবে চড়াও হয়েছে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন। মহিলা, সমাজকর্মী সহ একাধিক আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা এলাকায় সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করা হয়েছে।
খনি-বিরোধী আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বিবৃতিতে মোর্চা বলেছে, খনি বা শিল্পের জন্য কৃষকদের তাঁদের কৃষিজমি, চারণভূমি, বসতভিটা ছেড়ে দিতে বাধ্য করা উচিত নয়। Right to Fair Compensation and Transparency in Land Acquisition, Rehabilitation and Resettlement Act, ২০১৩ অনুযায়ী ন্যায্য ক্ষতিপূরণ এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণের জন্য স্পষ্টভাবে সম্মতি না দেওয়া পর্যন্ত কৃষকদের জমি দখল করা যাবে না।
মঙ্গলবারও প্রস্তাবিত কয়লা খনি প্রকল্প বাতিলের দাবিতে পাঁচামীতে বিরাট মিছিল করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। মিছিল থেকে পুলিশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও আওয়াজ উঠেছে। এক আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, গভীর রাতে গ্রামে গ্রামে ঢুকে অত্যাচার চালাচ্ছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের বাড়ি ভাঙচুর করছে, ভয় দেখাচ্ছে।
অন্যদিকে, সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণের চেক এবং চাকরির অ্যাপয়ন্টমেন্ট লেটার নেওয়ার জন্য কৃষকদের নবান্নে আসতে হবে বলে নির্দেশ জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তেও ক্ষুব্ধ কৃষকরা।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন