প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই তদন্তের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে শাসক দল তৃণমূল! তার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিকে চিঠি পাঠিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে! সূত্রের খবর, তৃণমূলের এক আইনজীবীর নাম করে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে বিচারপতিকে অনুরোধ করা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রেহাই দিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশের সময়সীমা বাড়ানো হোক। এই খবর জানাজানি হতেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচার ব্যবস্থায় রাজ্যের শাসকদলের হস্তক্ষেপের অভিযোগ আরও জোরালো হল।
সপ্তাহ খানেক আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে গ্রুপ-ডি কর্মী এবং নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হাজিরার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি উক্ত দিনে বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে পার্থকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হতে পারবেন না। তারপরেই অত্যন্ত তৎপরতায় পার্থর আইনজীবীরা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন স্থগিতাদেশ চেয়ে। সেই মামলায় চার সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেওয়ায় রেহাই মিলেছে পার্থর। কিন্তু এরই মধ্যে সেই চিঠি প্রকাশ্যে এসে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গেছে, তাপস সামন্ত নামে এক আইনজীবীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে তারিখ রয়েছে ১৫ এপ্রিল। ওই চিঠিটি বিচারপতির সুব্রত তালুকদারের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, আমি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর, আপনাকে অনুরোধ করছি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এসএসসির মামলায় যেন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া না হয়। এই বিষয়ে স্থগিতাদেশ আরও ১২ সপ্তাহ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি নাকি আশ্বাস দিয়েছেন যে সিবিআই তদন্তের জন্য আবেদন করবেন না। এদিকে বিকাশ রঞ্জন জানিয়েছেন যে, তিনি এই পত্রলেখক তাপস সামন্তকে আদতে চেনেনই না। তাঁর সঙ্গে এবিষয়ে কোনও কথা হয়নি। তাছাড়া এভাবে বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে মামলা প্রভাবিত করা যায় না। দুঃখের বিষয় হচ্ছে তাঁর নাম জড়িয়ে দুর্নাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তাপস সামন্ত চিঠি লেখার কথা অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তিনি কাউকে এই ধরনের চিঠি পাঠাননি। বিকাশ ভট্টাচার্যের সঙ্গে আমার কোনও পরিচয় নেই। এই চিঠি জানি না কারা লিখেছে। কারা এটা করেছে। তিনি বর্ধমান আদালতে প্র্যাকটিস করেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় মামলার সঙ্গে যুক্ত নন। তবে তিনি তৃণমূলের সমর্থক একথা স্বীকার করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন