আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার পোর্টালে অবশিষ্ট উপভোক্তাদের নাম তুলতেই হবে। রাজ্য সরকারকে নয়া ফরমান জারি করে সাফ জানালো কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।
পাশাপাশি, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ৯০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ না হলে রাজ্যকে জরিমানা দিতে হবে।
একদিকে আবাস যোজনায় একাধিক দুর্নীতির ঘটনায় জেরবার রাজ্য, তার উপর যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা! কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজ্য সরকার যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি তৈরি না করে, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থ থেকেই জরিমানা নেওয়া হবে।
অথচ আবাস যোজনায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮৪% উপভোক্তার তথ্য যাচাই করতে পারেনি রাজ্য। উপভোক্তাদের নাম চলতি মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় পোর্টালে না-তুললে বাকি ‘কোটা’ অন্য রাজ্যে চলে যাবে।
এই বিষয়ে বুধবার নবান্নে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিক এবং জেলাশাসকরা। নবান্ন সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই মুখ্যসচিব স্পষ্ট করেছেন যে, কেন্দ্রের দেওয়া সময়সীমা মেনেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া এবং ৩১ মার্চের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, বাড়ি নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ইট-বালি-সিমেন্ট জোগাড়ের কাজে জোরদার নজরদারি চালাতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন দ্বিবেদী।
এছাড়াও, বিভিন্ন ইটভাটার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই সামগ্রী জোগাড়ের ব্যবস্থা করতে বিডিওদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বুধবারের বৈঠক শেষে জানা গেছে, চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ির মধ্যে মাত্র ৫ লক্ষ ৯১ হাজারটি বাড়ির নথিভুক্তিকরণ সম্ভব হয়েছে।
শুধু তাই নয়, নথিভুক্ত ৫ লক্ষ ৯১ হাজার বাড়ির মধ্যে অনুমোদন পেয়েছে মাত্র ১ লক্ষ ৮১ হাজার বাড়ি। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৬% বাড়ি আবাস যোজনায় ছাড়পত্র পেয়েছে। বুধবার পর্যন্ত এ রাজ্যে সর্বোচ্চ বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে, ৩১%। বাঁকুড়ায় ৪৬ হাজার বাড়ির মধ্যে অনুমোদন মিলেছে ১৪ হাজার ২৮৯টি বাড়ির। জেলাভিত্তিক শতাংশের নিরিখে এটাই সর্বাধিক।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পুরুলিয়ার। সেখানে অনুমোদন পেয়েছে মাত্র ২.৪৭%। চলতি অর্থবর্ষে সেখানে ৪৪ হাজার বাড়ি তৈরির কথা রয়েছে। বুধবার পর্যন্ত সেখানে মাত্র ১০৯৫টি বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন মিলেছে। একই চিত্র মুর্শিদাবাদে, বাড়ি না পেয়ে রাজ্য প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চলতি অর্থবর্ষে সেখানে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩.৫৩% বাড়ি অনুমোদন পেয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন