নিহত ছাত্রনেতা আনিস খানের গ্রামে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সারা গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। সেই কারণেই আমতার নিহত ছাত্র নেতার প্রতিবেশী মহিম খান এবং মীরাজ খানের উপর হামলা চালিয়েছে কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান হাসেম আলি খানের দলবল।
গত রবিবার আনিস খানের গ্রাম সারদা ষষ্ঠীতলা থেকে পানশিলা পর্যন্ত একটি পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পদযাত্রায় পা মেলান আনিসের পরিবারের সদস্য সহ গ্রামের প্রায় সকল বাসিন্দা। সেই পদযাত্রার সামনের সারিতেই উপস্থিত ছিলেন মহিম এবং মীরাজ। পদযাত্রা থেকে তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান তোলা হয় - গ্রাম বাঁচাও, চোর তাড়াও, বাংলা বাঁচাও।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে কাজে যাওয়ার পথে কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মহিম খানকে ঘিরে ধরে হাসিম আলি খানের দলবল। তাঁদের প্রশ্ন, পদযাত্রা থেকে কেন শাসক দলের নেতা-কর্মীদের 'চোর' বলে সম্বোধন করা হয়েছে। পাল্টা মহিম বলেন, চোরকে 'চোর' বলা অপরাধ নাকি? এই কথা বলার পরই মহিমকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। বুকে, পিঠে চোট পান তিনি।
হামলার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছান সিপিআই(এম) নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ততক্ষণে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় হাসিম খানের দলবল। এরপর আনিস খানের বাড়ি সংলগ্ন তাজ ক্লাবের সামনে এসে মীরাজ খানের উপর আক্রমণ চালায় তৃণমূল কর্মীরা। বুকে ও গলায় চোট পান মীরাজ। ঘটনাটি দেখামাত্রই ছুটে আসেন সারদা গ্রামের মহিলারা। গুরুতর আহত অবস্থায় মহিম এবং মীরাজকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তি রয়েছেন দু'জন।
সূত্র মোতাবেক জানা গেছে, হাসিম খানকে ঘিরে ধরে প্রতিবাদ জানান গ্রামবাসীরা। তাঁরা জানতে চান, কেন রাতের অন্ধকারে খুন করা হল ছাত্রনেতা আনিস খানকে? আনিসের হত্যা, পঞ্চায়েতের দুর্নীতির হিসেব সহ একাধিক দাবি তোলেন তাঁরা। চাপের মুখে পড়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বাধ্য হন হাসিম খান এবং তাঁর সহকর্মীরা।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কৃষক সভার হাওড়া জেলা সম্পাদক পরেশ পাল। গ্রামবাসীদের দাবি, ভয়ভীতি সরিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ। আনিসের খুনের ইনসাফ চেয়ে পথে নামছেন তাঁরা। তাই গ্রামবাসীদের উপর আক্রমণ করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন