‘অন্নপূর্ণা যোজনার তিন হাজার টাকা পেতে চান, তাহলে বিজেপির মেম্বারশিপ ফর্ম ফিলাপ করুন।‘ – সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের এহেন মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সুবিধা পেতে হলে কি তাহলে বিজেপি করতে হবে? সুকান্তের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
সোমবার পূর্ব বর্ধমানের কালনার পুরোশ্রী হলে অনুষ্ঠিত দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেন সুকান্ত মজুমদার। এদিন দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি ছিল সদস্য সংগ্রহ অভিযানও। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও জেলা স্তরের নেতারাও। উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনে বাংলায় এসে দলকে এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন। এক মাসের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
সেখানেই সুকান্ত বলেন, 'বাড়ি বাড়ি গিয়ে, পাড়ার লোককে বলতে হবে, ভারতীয় জনতা পার্টির মেম্বারশিপ গ্রহণ করুন। তখন তাঁরা জিজ্ঞেস করবেন কেন করব? তাঁদের বলুন যে, তা হলেই নরেন্দ্র মোদীর সরকার তৈরি হবে। মহিলাদের বোঝান যদি অন্নপূর্ণা যোজনার তিন হাজার টাকা পেতে চান তা হলে বিজেপির মেম্বারশিপের ফর্ম ফিলাপ করুন।'
এদিন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সুকান্ত। তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে তৃণমূলের চাকরে পরিণত করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এখন এক পয়সাও দাম নেই। গোটা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এখন ট্র্যাফিক পুলিশ হয়ে গিয়েছে।'
সুকান্তের প্রকাশ্যে এহেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমি শুনেছি বিজেপির রাজ্য সভাপতি কী বলেছেন। এঁরা মন্ত্রী? এঁরা নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা আলোকিত করে থাকেন। ছিঃ ছিঃ ছিঃ। বাংলায় তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভান্ডার দেন। কাউকে এটা তো বলা হয় না যে, তৃণমূলের সদস্যপদ নিলে তবেই লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবেন। বিজেপি যত এ সব করবে বাংলার মানুষ তত ওদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বাংলার বাইরে পাঠাবে।'
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে তৃণমূলের লক্ষীর ভান্ডারের পাল্টা ‘অন্নপূর্ণা যোজনা’র ঘোষণা করেছিল বিজেপি। এই প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের মাসে তিন হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল দল। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে শুরু হবে এই প্রকল্প।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন