টাটারা শত্রু নয়। তাই তারা রাজ্যে বিনিয়োগ করতে চাইলে তৃণমূল সরকার স্বাগত জানাবে। রিলায়েন্স গোষ্ঠী আছে, টাটাও থাকবে। এমনটাই দাবি করলেন শিল্প ও বাণজ্য দফতরের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'টাটা আমাদের শত্রু নয়। আমরা জমি বাছাইয়ের পদ্ধতির বিরুদ্ধে ছিলাম। টাটাদের থেকে কোনও প্রস্তাব এলে আমরা নিশ্চয়ই ভেবে দেখব।'
বছর ১৩ আগে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় তৃণমূল ছিল বিরোধী শিবির। আর এখন তারাই শাসকদল।তৃতীয়বারের জন্য বিপুল সংখ্যক ভোট এবং আসনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসেছে। তারপর থেকে রাজ্যত্যাগী টাটাদের উদ্দেশেই বারবার বার্তা দিচ্ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দিনকয়েক আগেই তিনি বলেছিলেন, ‘বাম সরকার ও জমি অধিগ্রহণ নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল। টাটার বিরুদ্ধে নয়।’
শুক্রবার ফের টাটাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, 'অনিচ্ছুক কৃষকদের থেকে বহুফসলি জমি নেওয়া হয়েছিল। আমরা জমির স্থান বাছাই নিয়ে বলেছিলাম। টাটার নানা বিজনেস তখনও এখানে ছিল। টাটারা আসলে খুশি হব। আমাদের মূল লক্ষ্য বাংলায় কর্মসংস্থান। সেটাই আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার।' বেকারত্ব নিয়ে যে রাজ্য সরকারকে সাধারণ মানুষ বারবার সমালোচনা করেন, তারই যেন জবাব দিলেন তিনি।
রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, 'টাটাদের কোনও প্রপোজাল থাকলে, তাকে আমরা স্বাগত জানাব। রিলায়েন্সের মতো বড় সংস্থাও এখানে কাজ করছে। বাংলায় শিল্পায়ন হোক, তা আমরা সকলেই চাই। কিন্তু অগ্রগতি চাই শিল্প কৃষির সমন্বয়ে।'
১৩ বছর আগে সিঙ্গুর ছেড়ে টাটার ন্যানো কারখানা চলে গিয়েছিল গুজরাটে। সেই ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য। সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনকে সামনে রেখেই বাম শাসনের সমাপ্তি ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল।
তারপর গত ১০ বছরে রাজ্যে শিল্প সম্মেলন, মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প আনতে বিদেশ সফর হলেও টাটা ক্ষত থেকেই গিয়েছিল তৃণমূলের। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, 'টাটার বিরুদ্ধে আমরা লড়াইও করিনি। দেশে ও বিদেশে টাটা অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী, সম্মানীয়ও বটে। আমরা টাটাকে দোষ দিতে পারি না।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন