শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার জট যেন কাটছেই না রাজ্যে। একাধিক স্কুলে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। পঠন-পাঠন প্রায় বন্ধ। এমন দৃশ্যই দেখা গেল পুরুলিয়ায়।
বেশ কিছু দিন ধরেই পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি ব্লক থেকে এমন অভিযোগ আসছিল।পুরুলিয়া জেলার ঝালদা, বাগমুন্ডি, রঘুনাথপুর সহ বহু ব্লকে শিক্ষক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। তার মধ্যে বাঘমুন্ডির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে গার্লস হাইস্কুলে শিক্ষিকার সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৩- এ। পাশাপাশি এখানে একটি জুনিয়র হাইস্কুল দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকবিহীন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সেই সমস্যার সমাধান করতেই এবার তৎপর রাজ্য সরকার। শিক্ষক সংকট ঘোচাতে অন্যান্য স্কুলগুলি থেকে বাঘমুন্ডি হাইস্কুলগুলিতে পাঠানো হয়েছে ১০ জন শিক্ষককে। যাদের মধ্যে রয়েছেন প্রাথমিকের বেশ কিছুজন শিক্ষক। তবে এরপরেই শুরু হয় বিতর্ক। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে যে, প্রাথমিকে পড়ানোর অভিজ্ঞতা বা যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক কীভাবে হাইস্কুলে পড়াবেন?
এ ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক সংবাদ সংস্থায় জানিয়েছেন, "কিছু মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষককে সাময়িক ভাবে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করা হলেই তাঁরা আবার নিজেদের স্কুলের দায়িত্বে ফেরত যাবেন।" পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন যে এটা আপৎকালীন সিদ্ধান্ত। এটা কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নয়। যোগ্যতার নিরিখেই কয়েকজন শিক্ষককে সাময়িকভাবে ওই সব স্কুলে পাঠানো হয়েছে। পরে আবার তাদের নিজেদের স্কুলে ফিরিয়ে আনা হবে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দা জানিয়েছেন, "বাঘমুন্ডি ব্লকের ৬টি স্কুলে ১০ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব দূর করতেই ১০ জনকে বাঘমুন্ডির ওই ৬টি স্কুলে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জুনিয়র হাই স্কুল ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকও রয়েছেন।" তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে শিক্ষা দপ্তরের তরফে গত ২ জুলাই একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, জেলাশাসক জানিয়েছেন যে আগামীদিনে ওই সকল শিক্ষক সেখানকার স্কুলেই থেকে যাবেন। এক্ষেত্রে তিনি 'বদলি' শব্দটি ব্যবহার করেছেন বলে প্রশ্ন উঠছে যে, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষককে কিসের ভিত্তিতে হাইস্কুলে 'বদলি' করা হল? তাঁদের কি হাই স্কুলে পড়ানোর যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা রয়েছে?
এই ঘটনার জেরে সোমবার, পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি ব্লকে শিক্ষক ঘাটতির প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকার কথা ঘোষণা করেছিল কংগ্রেস।
পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, "প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কীভাবে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য নিয়োগ করা হয়? এর নির্দেশিকা জারি করুক প্রশাসন আমরাও এটা দেখতে চাই।" সোমবার নিজস্ব ফেসবুক পোস্টে নেপালবাবু জানিয়েছেন, ওই ১০ জন শিক্ষক নিয়োগপত্র না পেলে যেন কাজে যোগ না দেন। না হলে পরবর্তীকালে ওই সমস্ত শিক্ষকরা সমস্যায় পড়তে পারেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন