৮০,০০০ কাটমানি দিয়ে অস্থায়ী চাকরি, সেখানেও ৭ মাস বেতনহীন - ঝাড়গ্রামে বিক্ষোভ স্বাস্থ্যকর্মীদের

এবার স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও টাকা দিয়ে চাকরির অভিযোগ উঠলো। ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৪১ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে।
বিক্ষোভ স্বাস্থ্যকর্মীদের
বিক্ষোভ স্বাস্থ্যকর্মীদেরছবি - সংগৃহীত
Published on

৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা কাটমানি দিয়ে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মীর চাকরি পেয়েছিলেন মিতালী মাহাতো, বন্দনা ঘোষ, কাজল মাহাতোরা। কিন্তু সেই দীর্ঘ কয়েকমাস বেতন পাননি তাঁরা। প্রায় ৭ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছেন ৪১ জন স্বাস্থ্য কর্মী। প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম মহকুমা চাকরিতে শাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা।

মিতালী মাহাতো নামের এক আন্দোলনকারী স্বাস্থ্যকর্মীর জানান, "আমরা সবাই টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছি। কেউ ৫০ হাজার টাকা, আবার কেউ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি। ঠিকাদার সংস্থার মালিক সুভাষ দাস সেই টাকা নিয়েছেন। স্থায়ী সরকারী কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উনি। প্রতি বছর ১০০০ টাকা করে বেতন বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছিলেন উনি। এগুলোর কোনটাই হয়নি। উল্টে ৭ মাস বেতন পাইনি আমরা।"

আর এক আন্দোলনকারী বলেন, "আমাদের কথা কেউ শুনছে না। সবাই এড়িয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় শাসক দলের নেতারা সকলেই জানেন আমাদের পরিস্থিতির কথা। কিন্তু ওনারা কোনো সাহায্য করছেন না। এখন আমরা কোথায় যাব?"

টাকার বিনিময়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজ্যের শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ জেলে। এবার স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও টাকা দিয়ে চাকরির অভিযোগ উঠলো। ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৪১ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, যে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, সেখান থেকে বলা হয়েছিল, শীঘ্রই ঝাড়গ্রামে মেডিক্যাল কলেজে সকলকে স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হবে। জমি-গহনা বন্দক রেখে ঠিকাদার সংস্থাকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে তাঁরা। হাসপাতালের পুরনো ভবন, নার্সিং স্কুল, সিসিইউ, এসএনসিইউতে কাজ করেন তাঁরা। এখন তা স্থায়ী হওয়া তো দূরের কথা, গত ৭ মাস ধরে বেতনই পাচ্ছে না তাঁরা। চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছেন তাঁরা। বকেয়া বেতনের দাবিতে জেলাশাসক এবং হাসপাতাল সুপারের দপ্তরের সামনে মঙ্গলবার অবস্থান বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

জানা গেছে, প্রথমে হাতেই বেতন দিতেন এজেন্সির ঠিকাদার। গত জুলাই মাস থেকে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেতন দেওয়ার নিয়ম চালু হয়। এরপর থেকে আর টাকা পাননি তাঁরা, বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

এই সমস্ত বিষয়ে অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার মালিক সুভাষ দাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। বাজে কথার উত্তর দেওয়ার সময় নেই বলে প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। এরপর বলেন, "সরকারের কাছ থেকে আমিও টাকা পাইনি। তাই টাকা বকেয়া রয়েছে।"

ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার শুভ্রদীপ মাহাতো বলেন, আমরা অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেই না। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এসব দেখভাল হয়। মহকুমা শাসকের সাথে বৈঠক হয়েছে। শীঘ্রই সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"

বিক্ষোভ স্বাস্থ্যকর্মীদের
'একটা চাকরির খুব প্রয়োজন', দেশের হয়ে ফুটবল খেলা পৌলমী এখন ডেলিভারি এজেন্ট

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in