২০১৪ সালের প্রাইমারি TET পরীক্ষায় ফেল করেছেন, এমন ৩২৫ জন প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এই কাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। বৃহস্পতিবার, ব্যাঙ্কশাল আদালতে, ধৃত প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের (WBBPE) সভাপতি মানিকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা- ইডি (ED)।
শুধু তাই নয়, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের পর এবার তাঁর জামাইয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তদন্তকারীরা অফিসারেরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ওই ৩২৫ জনকে চিহ্নিত করেছে ইডি। এবার তাঁদেরও জেরা করা হবে। কোথায়, কীভাবে টাকা দিয়েছেন তাঁরা- তা জানা হবে।
এছাড়া, তাঁদের (৩২৫ জনের) চাকরীর বিনিময়ে যে বিপুল পরিমাণ টাকা নেওয়া হয়েছে, কোথায় লুকোনো আছে তাও জানার জন্য মানিক ভট্টাচার্ধকে আরও জেরার প্রয়োজন বলে আদালতে জানিয়েছেন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি (ED counsel Phiroze Edulji)।
আদালতে, এদিন ইডি'র আইনজীবী বলেন, 'বিভিন্ন মনীষী যেমন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃঞ্জদেবের নামেও ডিএলএড (D. El.Ed) কলেজ রয়েছে। সেই কলেজ থেকেও অফলাইনে ভর্তির জন্য ৫ হাজার করে টাকা তোলা হয়েছে। মনীষীদের নামাঙ্কিত কলেজে থেকেও ভর্তির নামে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে টাকা তোলা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। দুর্নীতি কতটা জেঁকে বসেছে তা এতেই স্পষ্ট।'
এ দিন আদালতে তথ্য, নথি জমা দিয়ে ইডি জানায়, এখনও পর্যস্ত জানা গেছে এভাবে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি ডিএলএড (D. El.Ed) কলেজগুলি থেকে ২০ কোটি টাকার বেশি নগদে নিয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য।
আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি () এদিন এজলাসে বলেছেন, 'এই তালিকায় নাম রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি ডিএলএড (D. El.Ed) কলেজের। কেউ ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছে, কেউ ৭০ হাজার টাকা, সেই তালিকা মেলালে ২০ কোটিও ছাপিয়ে যাচ্ছে।'
ইডির আইনজীবী দাবি করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি থেকে এভাবে প্রভাব খাটিয়ে টাকা তোলা আসলে তোলাবাজির নামান্তর ।
এর আগে ইডি'র দফতরে হাজিরা দিতে এসে 'অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভারস অ্যাসোসিয়েশন (ABTTAA)-এর সভাপতি, তথা মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ শিক্ষা ব্যবসায়ী, একাধিক বিএড (B.Ed) ও ডিএলএড (D. El.Ed) কলেজের মালিক তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal) প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কলেজগুলিতে অফলাইন আডমিশনের ক্ষেত্রে ছাত্র পিছু পাঁচ হাজার টাকা মানিক ভট্টাচার্যের কথামত তাঁর অফিসে পাঠাতে হতো। যার পরিমাণ কোটি কোটি টাকা তার পরিমাণ।
দুপক্ষের সওয়াল জবাব শেষে এদিন মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে আরও ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তাঁকে জেলে গিয়েও ফের জেরা করতে পারবে ইডি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন