বিজেপির দখলে থাকা রায়গঞ্জ ব্লকের ৪ টি, করনদিঘী ব্লকের ৪ টি গ্রামপঞ্চায়েতের পর এবার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েত তৃনমূল কংগ্রেসের দখলে। বিজেপি ও কংগ্রেস জোট পরিচালিত মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে বিজেপিরই নির্বাচিত ৪ জন সদস্য অনাস্থা এনেছিল। এরফলে হাতছাড়া হল বিজেপি পরিচালিত মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েত।
বুধবার পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী তৃনমূল কংগ্রেসের প্রধান নির্বাচন করা হল। এদিন বিজেপি থেকে আসা ৪ জন সদস্য তৃনমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নতুন প্রধান নির্বাচন করেন। প্রধান নির্বাচিত হন দলত্যাগী বিজেপি সদস্যা লতা দেবশর্মা। বিজেপির বাকি সদস্য এবং কংগ্রেসের সদস্যরা এদিন না আসায় কোনও ভোটাভুটি ছাড়াই প্রধান গঠন হয়ে যায়। নবনির্বাচিত প্রধান ও কালিয়াগঞ্জ ব্লক তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি নিতাই বৈশ্যকে নিয়ে সবুজ আবীর খেলায় মেতে ওঠেন মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েতের তৃনমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকেরা।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করেছিল বিজেপি ও কংগ্রেস জোট। মোট ২২ আসনের মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েতে বিজেপি পেয়েছিল ১০ টি, তৃনমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৯ টি এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ৩ টি আসন। বিজেপি কংগ্রেসকে সাথে নিয়ে পঞ্চায়েতের দখল নেয়।
কিন্তু বিজেপি পরিচালিত মোস্তাফানগর পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত বোর্ডের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠেন বিজেপিরই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। ৪ জন বিজেপি সদস্য দলত্যাগ করে তৃনমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। ফলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত বোর্ড। আগেই কালিয়াগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের উপস্থিতিতে মোস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃনমূল কংগ্রেস। বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত বোর্ডের বিরুদ্ধে সহজেই অনাস্থা পাশ হয়ে যায়।
বুধবার তৃনমূল কংগ্রেসের ৯ জন এবং বিজেপি থেকে ৪ জন এই মোট ১৩ জন তৃনমূল কংগ্রেসের সদস্যরা ব্লক প্রশাসনের নির্দেশ ও উপস্থিতিতে প্রধান নির্বাচন করেন। বিজেপি ও কংগ্রেসের কোনও সদস্যই এদিন উপস্থিত না থাকায় বিনা ভোটাভুটিতে প্রধান নির্বাচন হয়ে যায়। প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপি থেকে তৃনমূল কংগ্রেসে আসা লতা দেবশর্মা।
কালিয়াগঞ্জ ব্লক তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি নিতাই বৈশ্য জানিয়েছেন, বিজেপির প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আগেই পাশ হয়ে যায়। এরফলে বিজেপির হাত থেকে পঞ্চায়েত বোর্ড দখলে আসে তৃনমূল কংগ্রেসের। গ্রামের বিজেপি নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। বিজেপিতে থেকে তাঁরা কোনও উন্নয়ন করতে পারছেন না। মানুষের কোনও পরিষেবা দিতে পারছিলেন না। তাই তাঁরা দলে দলে বিজেপি ছেড়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে শামিল হতে তৃনমূল কংগ্রেসের যোগদান করছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন