চরম সংকটের মুখে রাজ্যের প্রায় ৭০ লক্ষ মৎস্যজীবীদের জীবন। বাম সরকারের আমলে মৎস্যজীবীদের জন্য যে সুরক্ষা আইন তৈরী করা হয়েছিল, তা এবার বাতিল করল তৃণমূল সরকার। এমনকি এর আগেও তাঁদের সুবিধার জন্য যে যে প্রকল্পগুলি তৈরী করা হয়েছিল, সেগুলিও বাতিল করেছে রাজ্য।
মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, বর্তমানে সরকারের তরফ থেকে তাঁরা কোনও পরিচয়পত্র, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিপূরণ, সাহায্য কিছুই পাচ্ছেন না। সমবায়ের অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। এমনকি, সমবায়ের নির্বাচনও সঠিক সময়মত হচ্ছে না। আইন সংস্কারের মধ্যে দিয়ে তাঁদের জীবনকে সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্য তথা সমগ্র দেশের মৎস্যজীবীদের প্রতি সরকারি অসহযোগিতা এবং মৎস্যজীবীবিরোধী একাধিক কালা আইন এবং নীতি প্রণয়ণের প্রতিবাদে গত ১৬ অক্টোবর থেকে দু'দিন ব্যাপী সাংগঠনিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় নদীয়ার পলাশিতে। কর্মশালার ডাক দেয় সারা ভারত মৎস্যজীবী ও মৎস্যশ্রমিক ফেডারেশন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি।
সমাবেশ ও কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সিআইটিইউ-র সর্বভারতীয় সভানেত্রী ড. কে হেমলতা, ফেডারেশনের সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক উমা সরকার। জানা গেছে, ওই সমাবেশে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে মৎস্যজীবীদের জমায়েত হয়েছিল উপচে পড়ার মত।
বৃহস্পতিবার, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মৎস্যজীবী সমিতির সম্পাদক দেবাশীষ বর্মণ জানান, ধারাবাহিকভাবে রাজ্য সরকারের বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। গোটা দেশের মৎস্যক্ষেত্রকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে চাইছে রাজ্য এবং কেন্দ্র। তাই এর প্রতিবাদে আমরা জেলাভিত্তিক ডেপুটেশন, জমায়েত এবং বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী বছর কলকাতায় মৎস্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হবে।
বর্মণের কথায়, সারা দেশের প্রায় ১৫ কোটি মৎস্যজীবীদের কর্ম এবং বাসস্থান কেড়ে নিতে তৎপর উভয় সরকার। মৎস্যক্ষেত্রে বিগত ৭০ বছর ধরে যে সম্পদ মজুত করা হয়েছে তা বেসরকারিকরণের পথে এগোচ্ছে কেন্দ্র, সেখানে মদত দিচ্ছে রাজ্যও। বর্তমানে, উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষরা যা কিছু উৎপাদন করছেন তা বেশিরভাগই চলে যাচ্ছে অ-মৎস্যজীবীদের হাতে। যার ফলে, নিজেদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন