এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণকাণ্ডে কটক থেকে গ্রেফতার করা হলো কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগ। সিআইডি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ এবং ওড়িশা পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্তকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন একটি মোটর বাইকে করে ভানু, তাঁর ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগ এবং পুত্র বিশ্বজিৎ বাগকে পালাতে দেখে গ্রামবাসীদের একাংশ। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে অবস্থিত ওড়িশা সীমান্ত। গ্রামবাসীরা এও জানিয়েছিলেন ভানুর মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষত বিক্ষত ছিল।
জানা যাচ্ছে, ভানুর খোঁজে সিআইডি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ এবং ওড়িশা পুলিশ তাঁর ছবি নিয়ে ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। সন্ধান করে সিআইডি জানতে পারে, প্রথমে বালেশ্বর ও পরে কটকে পালিয়ে যান ভানু। সেখানেই একটি হাসপাতালে খোঁজ পাওয়া যায় তাঁর। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। শরীরের বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে তাঁর।
চিকিৎসাধীন থাকায় ভানুকে পশ্চিমবঙ্গে আনা হয়নি। তবে ভানু বাগের ছেলে ও ভাইপোকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে ওই দুজনকে বৃহস্পতিবারই আদালতে পেশ করা হতে পারে।
গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই শাসক দলের ছত্রছায়ায় অবৈধ বাজি কারখানা চালাচ্ছিলেন ভানু। এর আগে একবার পঞ্চায়েতের সদস্যও হয়েছিলেন ভানু। অনেক বছর আগেও তাঁর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ফলে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিল।
এই ঘটনায় পুলিশের দিকেও আঙুল তুলছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ সবকিছু জানা সত্বেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ভানুর কাছ থেকে কমিশন (টাকা) নিত পুলিশ।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, কমপক্ষে পনেরো জনের মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে, কিছু মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন মহিলা। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে আটজনের পরিচয় জানা যায়। তাঁরা হলেন অম্বিকা মাইতি, শক্তিপদ বাগ, কবিতা বাগ, মাধবী বাগ, জয়ন্ত জানা, বাপন মাইতি, মিনতি মাইতি ও শ্যামাশ্রী মাইতি। বাকি দুজনের শরীর এতোটাই পুড়ে গেছে যে শনাক্ত করা যায়নি। এঁদের প্রত্যেকেরই বাড়ি এই খাদিকুল গ্রামে। এছাড়া আরও দুজন কলকাতারা এসএসকেএম হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন একজনের দেহ ৯০ শতাংশ এবং অন্যজনের দেহ ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন