সরকারের দেওয়া ট্যাবের টাকা খরচ অন্য খাতে, স্কুলমুখো হচ্ছে না পড়ুয়ারা

ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে ডিজে বাজিয়ে ছাত্রদের নাচ
ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে ডিজে বাজিয়ে ছাত্রদের নাচনিজস্ব চিত্র
Published on

অনলাইনে পড়াশোনার সুবিধার জন্য সরকারের দেওয়া টাকায় ট্যাব কেনার কথা পড়ুয়াদের। তার জন্য পড়ুয়াদের ব্যাংক একাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে পাঠিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই টাকায় ট্যাব কেনার বদলে চলেছে অন্যান্য কাজকর্ম। কোথাও আমফানের ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বানানো হয়েছে, অথবা পরিবারের কারও চিকিৎসা কাজে লাগানো হয়েছে সেই টাকা। কিন্তু কেনা হয়নি ট্যাব-মোবাইল। ওই গরিব ঘরের পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আদৌ বসবেন কি না, স্কুলমুখো হবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলি।

রাজ্য সরকার থেকে স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এই মোবাইল কেনার রশিদ সংগ্রহ করে তা যাচাই করেই ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট তৈরি করতে হবে এবং সেটা শিক্ষা দফতরে পাঠাতে হবে। সেই কাজটা করতে গিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন প্রধান শিক্ষকরা। বিল জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন ওই পড়ুয়ারা। অনেকে স্কুলে যদিওবা আসছেন, সঙ্গে নিয়ে আসছেন জাল রশিদ। এবার সেই রশিদের আসল-নকল বিচার করতে গিয়ে কালঘাম ছুটেছে তাঁদের।

গত বছর থেকে করোনা মহামারীর জেরে বন্ধ স্কুল। পড়াশোনা চলছে অনলাইনে। উচ্চ মাধ্যমিক বা উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের যাতে পড়াশোনার কোনওরকম সমস্যা না ঘটে, তাই রাজ্য সরকার ট্যাব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। পাশাপাশি সেই ট্যাব কেনার রশিদ স্কুলে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে ডিজে বাজিয়ে ছাত্রদের নাচ
ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতেই চোপড়ায় ডিজে বাজিয়ে নাচ ছাত্রদের

এই সব সমস্যার কথা জানিয়ে রাজ্যের প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার এন্ড হেডমিস্ট্রেস এখন শিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন। জানা যাচ্ছে, গ্রামের দিকে প্রত্যেকটা স্কুলের প্রায় ৫০ শতাংশ পড়ুয়া ট্যাব মোবাইল না কিনে ওই টাকা অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করেছে। স্কুল থেকে রশিদ দেওয়ার কথা বলা হলেও তারা স্কুলে আসছেন না নয়তো ভুয়ো বিল নিয়ে হাজির হচ্ছে। কিন্তু আদতে সব পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি হওয়ার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। সেই সমাধান কবে মিলবে তা নিয়ে সংশয় প্রধান শিক্ষক মহল।

উল্লেখ্য, এর আগে গত জানুয়ারি মাসে এই ট্যাবের টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে রীতিমতো ডিজে বাজিয়ে নেচে গেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জয়ধ্বনি দিতে দেখা গেছিলো পড়ুয়াদের। উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের রামগঞ্জে এই ডিজে নাচের খবর প্রকাশিত হয়েছিলো পিপলস রিপোর্টারে। রামগঞ্জ হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা আনন্দ উল্লাসের মধ্যেই সেবার আওয়াজ তুলেছিলো "রাজ্যে দিদি আর একবার"।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in