সরকারি কর্মীদের ডিএ সহ সমস্ত বকেয়া মেটানোর মামলায় ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। এরই মাঝে কেন্দ্রীয় সরকার কর্মীদের জন্য ৪% ডিএ ঘোষণা করায় কার্যত চাপের মুখে রাজ্য। ডিএ বাড়ানোর দৌড়ে কেন্দ্রের থেকে কয়েক কদম পিছিয়ে পড়ল তৃণমূল সরকার। নতুন ব্যবস্থায় কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৫%।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আদালতের রায় ঘোষণার পর সরকারি কর্মী সংগঠনগুলির হুঁশিয়ারিতে এমনিতেই অস্বস্তিতে ভুগছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি পথে নেমে আন্দোলন করার কথাও জানিয়েছেন সংগঠনের কর্মীরা। তার উপর কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের ৪% ডিএ বাড়ানোয় বাড়তি চাপে রয়েছে ঘাসফুল শিবির।
কর্মী সংগঠনগুলির কথায়, সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় কেন্দ্র ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন হারে ডিএ দিতে শুরু করে। এরপর বছরে দু'বার রীতি মেনে ডিএ বাড়াতে থাকে তাঁরা। ফলে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ-র পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৩৮%। যেখানে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় রাজ্য সরকার ডিএ বাড়িয়েছে মাত্র ৩%। অর্থাৎ, কেন্দ্রের সাথে রাজ্যের ডিএ ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৩৫%।
কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, বিগত কয়েক বছরে সর্বনিম্ন বেতনভুক কর্মচারীরও ২০২২-এর ১ জুলাই থেকে প্রতি মাসে ৭০০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। ‘গ্রুপ সি’ কর্মচারীদের মাসে লোকসান হচ্ছে ১০,০০০ টাকারও বেশি। যদিও এই ব্যাপারে রাজ্যের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এ প্রসঙ্গে মামলাকারী কর্মী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার ডিএ নিয়ে টালবাহানা করছে। আমরা অনিচ্ছুক সরকারের হাত থেকে ডিএ আদায় করেই ছাড়ব। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি পথে নেমে আন্দোলন করব।
কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের অভিযোগ, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা চরম বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের সাথে প্রতারণা করছে তৃণমূল সরকার। পুজোর ছুটির পর ফের রাস্তায় নামব আমরা।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের কথায়, ২০০৯ সালের রোপা রুল মেনে বামফ্রন্ট সরকার ডিএ-র স্বীকৃতি দেয়। এটা কর্মচারীদের আইনি অধিকার, কারোর দয়ার দান নয়। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না-পেলে আগামী দিনে প্রশাসনকে স্তব্ধ করার মতো কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব। বৃহস্পতিবার সারা রাজ্যে টিফিনের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন