ভুয়ো 'স্বাস্থ্যসাথী' কার্ডের সন্ধানে নথি যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত রাজ্যের

সরকারি তথ্য বলছে, প্রায় ২.৩০ কোটি পরিবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছে। ব্যক্তি-উপভোক্তা ধরলে প্রায় আট কোটি। কিন্তু প্রায় ৫০ লক্ষ উপভোক্তার আধার নম্বর নেই। আবার কয়েকজনের একই নম্বর।
ভুয়ো 'স্বাস্থ্যসাথী' কার্ডের সন্ধানে নথি যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত রাজ্যের
ফাইল চিত্র - সংগৃহীত
Published on

রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে নানা সময়েই জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের ভুয়ো কার্ড, ভুয়ো আধিকারিকের খোঁজ তো প্রায়শই পাওয়া যায়। সেরকম হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেও। এমনটাই সন্দেহপ্রকাশ করল রাজ্য। তাই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ডও ঝাড়াইবাছাই করা হবে। সরকার চাইছে, যাঁদের প্রকৃতই প্রয়োজন, তাঁরাই যেন স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের পরিষেবা পান। তাই এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। নথিপত্রও খুঁটিয়ে দেখা হবে।

ইতিমধ্যে সব জেলা প্রশাসনকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সরকারি তথ্য বলছে, প্রায় ২.৩০ কোটি পরিবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছে। ব্যক্তি-উপভোক্তা ধরলে প্রায় আট কোটি। কিন্তু প্রায় ৫০ লক্ষ উপভোক্তার আধার নম্বর নেই। আবার কয়েকজনের একই নম্বর। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যসাথীতে নাম নথিভুক্ত করতে আধার বাধ্যতামূলক করা হয়।

এমন হতেই পারে যে, আগে নথিভুক্ত উপভোক্তাদের একাংশের কাছে প্রকৃত আধার নম্বর থাকলেও তা নথিবদ্ধ হয়নি। আবার অসাধু উপায়ে কেউ কার্ড পেয়েছে। সেরকম হলে তা-ও চিহ্নিত করা প্রয়োজন। মূলত দু’টি উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যাচাইয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রথমত, সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা যাঁদের সত্যিই প্রয়োজন, তাঁদের হাতে পৌঁছে দেওয়া। দ্বিতীয়ত, সাশ্রয়। রাজ্যে বহু সামাজিক প্রকল্প চলছে, সেসব খাতে খরচ বিপুল। তাই সরকার শুধু প্রকৃত উপভোক্তাদের জন্যই অর্থ ব্যয় করতে চাইছে।

অভিজ্ঞ প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই প্রকল্পে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। উপভোক্তা পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২.৩০ কোটি। এর আড়াই শতাংশ বা কমবেশি ছ’লক্ষ কার্ড বাতিলযোগ্য হলেও বছরে ৪০-৫০ কোটি টাকা বাঁচবে। সরকার জানিয়েছিল, পরিবারের প্রধান মহিলা সদস্যের নামে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হবে। বাকি সদস্যেরা তাঁর অধীনে সুবিধা পাবেন।

দ্বিতীয় দুয়ারে সরকার কর্মসূচির সময়ে নবান্ন নির্দেশ দিয়েছিল, জেলা স্তরে যাচাই না করে ‘সিঙ্গল মেম্বার ফ্যামিলি’ বা একক উপভোক্তাকে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, অনেকে দীর্ঘ দিন একা থাকেন। তেমন কাউকে একক উপভোক্তা ধরতে সমস্যা নেই। কার্ড পেতেও সমস্যা নেই। কিন্তু পরিবার ভেঙে বা তেমন দাবি করে একই পরিবারে একাধিক কার্ডের ব্যবস্থা করার চেষ্টাও করা হচ্ছে। সেটা ঠিক নয়। তাই বিষয়টি দেখা প্রয়োজন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in