ফের এক তৃণমূল নেতাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠলো দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এবার ঘটনাস্থল হাওড়ার নাজিরগঞ্জ। সোমবার রাতে বাড়ির কাছেই গুলি করে হত্যা করা হয় তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদক ওয়াহজুল খানকে। রবিবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে এবং তার আগে শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিংয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় দুই তৃণমূল নেতাকে।
ওয়াহজুল খানের ভাই গুড্ডু খান জানিয়েছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিজের নতুন বাড়িতে যেতেন ওয়াহজুল, যা তাঁর পুরনো বাড়ি থেকে তিন-চার মিনিটের হাঁটা পথ। তিন-চার ঘন্টা সেখানে কাটিয়ে রাতে ফের পুরনো বাড়িতে এসে ফিরে যেতেন। সেখানে লোকজনের সাথে গল্প করতেন, তাঁদের সমস্যার কথা শুনতেন তিনি।
গুড্ডু জানিয়েছেন, সোমবার বাড়ি ফেরার সময় বাড়ির কাছেই বেশ কিছু বন্দুকধারী দুষ্কৃতি ওয়াহজুল খানকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি চালায়। তিনটি গুলি লাগে তাঁর গায়ে। তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। আজ সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ এবং আরও তিনজনের খোঁজে সন্ধান চালাচ্ছে। হাওড়া জেলা পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের কাছে থাকা একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছি আমরা। দু'জনকে চিনতে পেরেছি আমরা। তাঁদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও দু'জনের সন্ধান পেয়েছি আমরা। তাঁদেরও আটক করেছি। এখনও তিনজনের সন্ধান চলছে। ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে।
গুড্ডু খান, যিনি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ভাই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন তাই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের কাজে সন্তুষ্ট তিনি ও তাঁর পরিবার।
তৃণমূল এই ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলছে। তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষ জানিয়েছেন, পুরসভা নির্বাচন এসে গেছে। তাই আমাদের দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আমাদের বিশ্বাস এই হত্যার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে।
অন্যদিকে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে তৃণমূলের এসসি-এসটি-ওবিসি সেলের নেতা মহম্মদ সুলেমানকে বাইকে করে এসে গুলি করে কিছু দুষ্কৃতি। আজ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় তাঁর।
এর আগে শনিবার ক্যানিংয়ের যুব তৃণমূল নেতা শেখ মহরমকে তাঁর বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করে কিছু দুষ্কৃতি। তিনদিনে তিন তৃণমূল নেতাকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, গোটা রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক খুনোখুনি চলছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন