তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করায় ডায়মন্ড হারবারে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হল শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পাশাপাশি তাঁর পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। তিনি ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ নিয়ে সাংসদ অভিষেকের সমালোচনা করেছিলেন।
পাশাপাশি তিনি দাবি করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তিনি কাউকে নেতা মানেন না। গোয়া-ত্রিপুরায় অভিষেক জিতে এলে তবে তাঁকে নেতা মানবেন। যদিও দলের নির্দেশ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে সাংসদ কল্যাণ বনাম তৃণমূলের তরজার ইতি টানতে হবে। কেউই এনিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করবেন না। কিন্তু বিরোধ থামছে না।
শনিবার সন্ধ্যায় ডায়মন্ড হারবারের সরিষায় ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ দেখান এলাকার কিছু মানুষ। তাঁদের দাবি, অভিষেককে অপমান করেছেন কল্যাণ। পাশাপাশি স্লোগান দেওয়া হয় ‘শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়’। অবশ্য, এই প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, কল্যাণের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের অনুগামীরা। তাঁরাও দলীয় সাংসদের কুশপুতুল দাহ করলেন! শনিবার ভবানীপুরে একদল তৃণমূল সমর্থক কল্যাণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের হাতে দেখা যায় সাংসদের ছবি বিকৃত করে পোস্টার, তাতে লেখা ‘ধিক্কার’। কোনওটাতে আবার লেখা, ‘মাতাল তোকে জানতে হবে, আগামীকে মানতে হবে’।
অভিষেক প্রসঙ্গে কল্যাণের মন্তব্যে দ্বৈরথ একসময় চরমে পৌঁছয়। পরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে এই ধরনের তরজ বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে বিতর্ক বাড়ান কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। নাম না করে কল্যাণকে বিঁধে বলেন, 'কয়েকজন বুড়ো রাতারাতি খুব জ্ঞান দিচ্ছেন। মার খাওয়ার সময় এঁরা তো কখনও ছিলেন না।' একইসঙ্গে তিনি অভিষেকের পাশেই দাঁড়াবেন বলে জানিয়ে দেন।
তিনি আরও যোগ করেছিলেন, 'অভিষেক ফালতু কথা বলেননি। ও নিজের এলাকায় কোভিড মডেল তৈরি করতে চেয়েছে। করে দেখিয়েছে। এই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দলে থেকেই কেউ যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জিন টেস্ট করে, মদন মিত্র তা বরদাস্ত করবে না।' এই গোটা ঘটনার ইতি টেনে টুইট করেছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এদিনই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, 'দলের কেউ কল্যাণ ব্যানার্জির কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে বলে আমার কাছে খবর নেই।'
এদিকে, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের আঁচ এসে পড়েছে মধ্যমগ্রামেও। সাংসদের বিরুদ্ধে রীতিমতো পোস্টার হাতে বিক্ষোভে দেখান যুব তৃণমূল কর্মীরা। উঠল অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সমর্থনে স্লোগানও। সাংসদের সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুস্থতা কামনা করে কলকাতার হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি কুরিয়ারের করবেন বলেও ঠিক করেছেন তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন