চাকরি দেওয়ার নামে এক তরুণীকে ফোন এবং ভিডিও কলে অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল শাসিত পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভার পুরপ্রধান শিশির কুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে। পেশায় তিনি অগ্রদ্বীপ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি অডিও এবং ভিডিও ক্লিপ ঘিরে শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক।
পুরুষ এবং তরুণীর কণ্ঠস্বর মিলিয়ে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপটি ৩০ মিনিটের। তবে সেটি বিভিন্ন সময়ে রেকর্ড করা হয়েছে। রেকর্ডিং থেকে জানা গেছে ওই তরুণী একজন চাকরিপ্রার্থী। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা পুরুষ কণ্ঠস্বরে এটা স্পষ্ট যে, তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী। অডিও ক্লিপে ওই তরুণী চাকরির জন্য অনুরোধ করছিলেন প্রভাবশালী ব্যক্তিটির কাছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, এক তরুণী শিশির কুমার মণ্ডলকে বলছেন - কাকু আপনি তো চেয়ারম্যান। আপনার অনেক ক্ষমতা। আমার একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিন। উত্তরে শিশিরবাবুকে বলতে শোনা যায়, তোর কত টাকা লাগবে বল, ৫, ১০ ১৫ হাজার টাকা। যা চাইবি দেব। তখন তরুণী জানান, টাকা চাই না কাকু। আমার একটা চাকরি চাই।
এরপর তৃণমূল নেতা বলেন - তাহলে আমাকে খুশি করে দে। এমনকি, ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও কলে তরুণীকে কৃষ্ণনগরের একটি লজে সময় কাটানোর প্রস্তাব দিতে এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায় শিশির মণ্ডলকে। যদিও ভাইরাল হওয়া অডিও এবং ভিডিও ক্লিপের কোনওটারই সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার দাবি, এই ক্লিপ দেখে তিনি লজ্জিত। এটা তাঁর বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত। এই কণ্ঠস্বর তাঁর নয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর গলার সাথে এই কণ্ঠস্বর বসানো হয়েছে। তিনি দলের সব স্তরে বিষয়টা জানিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিশির। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে থানায় দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানান তিনি।
তবে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপে যে পুরুষ কণ্ঠ শোনা গেছে, তার সাথে শিশিরের গলার স্বরের মিল রয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বুধবার রাতে অডিও এবং ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর শিশির কুমার মণ্ডলকে পুরপ্রধানের পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন