বিগত এগারো বছরে তৃণমূলের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স এক লাফে বেড়েছে প্রায় ৩০০ কোটি। নির্বাচন কমিশনের কাছে খোদ রাজ্য সরকারের পেশ করা নথি এমনটাই বলছে। ১০ বছর ৯ মাস আগে তৃণমূলের তহবিলে থাকা অর্থের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৪২ লক্ষ ৭৫ হাজার ৩২১ টাকা ৪৭ পয়সা। কমিশনের কাছে জমা দেওয়া শেষ হিসেব অনুযায়ী যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৪০ হাজার ৬৩৩ টাকায়।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের পর ওই বছর ৯ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে হিসাব জমা দিয়েছিল তৃণমূল। নথির নং ছিল - এআইটিসি/জিএস/ইসিআই/২০১১/২৭২। সেই হিসাবে দলের 'ট্রেজারার' হিসেবে সই করেছিলেন মুকুল রায়। তখন তিনি ছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যসভার সাংসদ। কমিশনের কাছে জমা দেওয়া নথিতে জানানো হয়, তৃণমূলের ওপেনিং ব্যালেন্স ২ কোটি ৪২ লক্ষ ৭৫ হাজার ৩২১ টাকা ৪৭ পয়সা।
উল্লেখ্য, '১১-র বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সিপিআই(এম) নেতা তথা রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেব সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, তৃণমূল চেকবই পুড়িয়ে দিয়েছে। এইসব টাকা অন্য কোনও বেআইনি পথে এসেছে। সেটাই নির্বাচনে ব্যবহার করেছে।
এর ঠিক এগারো বছর পর ২০২২-র গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও একপ্রস্থ হিসেব কমিশনের কাছে পেশ করেছে তৃণমূল। যেখানে 'ট্রেজারার' হিসেবে সই করেছেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের। গত ২৫ মে হিসেবের নথি তিনি কমিশনের কাছে জমা দিয়েছেন। যেখানে উনি বলেছেন, এই হিসেব চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।
অরূপের পেশ করা 'অ্যানেক্সচার বি' জানাচ্ছে তৃণমূলের কোষাগারে রয়েছে ৪২১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৪০ হাজার ৬৩৩ টাকা। অথচ মুকুল রায় এবং অরূপ বিশ্বাসের পেশ করা হিসেবের মাঝের ব্যবধান প্রায় ১০ বছর ৯ মাসের।
স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে যে ১১ বছরের মধ্যে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ কোনও রাজনৈতিক দলের কোষাগারে এল কীভাবে? রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বিরোধীদের কথায়, যেখানে রাজ্যে বেকারত্বের গ্রাফ আকাশছোঁয়া, শিল্প, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, অর্থনৈতিক পরিকাঠামো কার্যত প্রশ্নের মুখে সেখানে রাজ্যের শাসক দলের এই বিপুল পরিমাণ আয়ের উৎস কী?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন