শনিবার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় তৃণমূলের। সেখানে জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির সভানেত্রী রয়েছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তবে জায়গা পাননি এমন তাবড় নেতার নামও আছে। তাৎপর্যের বিষয় এই কমিটিতে অনেক নতুন মুখকে তুলে ধরা হয়েছে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই কমিটির মাধ্যমে হয়তো জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মুখকে সঙ্গী করে নিজেদের বিস্তারের পথ সুগম করতে চাইছে তৃণমূল নেত্রী। তবে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই কমিটি গঠনের ফলে দলের সব শীর্ষপদের অবলুপ্তি ঘটেছে।
ওই বৈঠকে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ওই কমিটিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে অভিষেকের সখ্যতা চোখে পড়ার মতোই। দলীয় আনুগত্য এবং নিষ্ঠার দাম পেলেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু বাদ পড়লেন মমতার বহু যুদ্ধের সৈনিক সৌগত রায়। সম্ভবত তাঁর সাম্প্রতিক ভূমিকা এর জন্য প্রভাব ফেলেছে। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারক কমিটিতে এলেন।
কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ মুখের একজন হলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীরামপুরের তিনবারের সাংসদ লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতকও বটে। গত মাসে ডায়মন্ড হারবার মডেল ও করোনার জন্য ভোট স্থগিত রাখার আর্জি জানাতেই অভিষেকের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন তিনি। তারপর চলে বাকযুদ্ধও। কলকাতায় এবং শ্রীরামপুরে প্রকাশ্যে অভিষেক অনুগামীরা কুশপুতুল পোড়ায় কল্যাণের।
সৌগত রায় ও ডেরেক ওব্রায়েন, লোকসভা এবং রাজ্যসভায় দলের শীর্ষ নেতা। তাঁরাও বাদ পড়েছেন। ডেরেক সর্বভারতীয় স্তরে দলের মুখপাত্র। জায়গা হয়নি কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর। তিনি গোয়ায় দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন। এ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কমিটিতে রয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, যশবন্ত সিনহা, অসীমা পাত্র।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ওয়ার্কিং কমিটি দেখেই সংগঠনে রদবদলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে অভিষেক-অনুগামীরা সরব হয়েছেন। তারপর জাতীয় কর্মসমিতি ঘোষণা করে এবং শীর্ষস্তরের সব পদ অবলুপ্ত করে দেওয়া হল। অন্যদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিয়ে একপ্রকার চরম বার্তা দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন