বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর। এবার আর জি কর কাণ্ডে আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করতে গিয়ে মহিলাদের পোশাক-কেশসজ্জা নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করলেন শাসক দলের মন্ত্রী।
গতকাল আরজি কর কাণ্ডে দিনহাটা-২ ব্লকে তৃণমূলের পালটা বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই উদনয়কে বলতে শোনা যায়, “যাঁদের বয়কাট চুল বা যাঁদের চুল স্ট্রেট, সেই মেয়েরা কেউ মদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন না। কারণ তাঁরা শহরের মানুষ, তাঁরা মদ খান না। তাঁরা ড্রিঙ্ক করেন। ড্রিঙ্ক করলে অসুবিধা নেই, মদ খেলে অসুবিধা।“
এখানেই শেষ নয়। এরপর বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে এনে আন্দোলকারীদের মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “হাসিনাকে দেখে যাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে, তা কী করে বন্ধ করতে হয়, তৃণমূল জানে। সেই কথা মাথায় রেখে সাবধানে আন্দোলনকারীরা আন্দোলন এগিয়ে যাও।“
এরপর তাঁর হুঙ্কার, “দোষীদের গ্রেফতার করুন, দোষীদের শাস্তির বন্দোবস্ত করুন। আমরাও তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন করব। কিন্তু নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইলে, তা প্রতিহত করার রাস্তা জানা আছে। কী করে সেটা প্রতিহত করতে হয়, বাংলার মানুষ সেটা জানে।“
এর আগেও আন্দোলনকারীদের আঙুল ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন উদয়ন। শনিবার কোচবিহারের সাগরদিঘিতে তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলছেন, যাঁরা সমাজমাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালাগালি করছেন, যাঁরা আঙুল তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাইছেন, সেই আঙুলগুলোকে চিহ্নিত করে ভেঙে দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। না-হলে এরা বাংলাকে বাংলাদেশ তৈরি করবার চেষ্টা করবে।’’
উদয়ন গুহর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, “মহিলাদের পোশাক নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার ওঁকে দেওয়া হয়নি। কথার মধ্যে দিয়েই অপরাধ ধরা পরে যায়। হাসিনাকে দেখে যাঁদের মুখে হাঁসি ফোটে, তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন মানে, হাসিনাকে দেখলে যারা রাগ করে উনি তাঁদের পাশে। উনি মৌলবাদীদের পাশে আছেন এটা বুঝিয়ে দিলেন। তৃণমূলের যে কত রকমের সুর, আর কত রকমের স্বর, এই সব নিয়েই তৃণমূল।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন