'তিন বছর অনেক অপমান অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। ৭ জানুয়ারি রবিবার সব অপমানের জবাব দেব।' বুধবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় একথা জানালেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
তৃণমূলের মধ্যে এই মুহূর্তে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে রয়েছে। প্রকাশ্যেই দলের শীর্ষ নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন। লোকসভা ভোটের কয়েকমাস আগে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত দিশেহারা তৃণমূল। তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবে সরব হয়ে দলকে আরও অস্বস্তিতে ফেললেন হুগলীর বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
বুধবার সকালে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন, "কেন আমি বলাগড় বিধানসভা থেকে দূরে বসে আছি সেই কদাকার ঘটনাক্রম নিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি রাত আটটার সময় আমি ফেসবুক লাইভ করতে চলেছি। বলা চলে শেষ জবাব দিতে চলেছি। সেদিন আমি কিছু নিজের কথা বলব আর আপনাদের মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া প্রশ্নেরও জবাব দেব। সাংবাদিক বন্ধুদেরও বলছি তৈরি থাকুন । তারপর ঘোষণা করবো আগামী দিনের কর্মসূচি। দুই তিন বছর অনেক অপমান অনেক সহ্য করেছি। আর নয়। লড়াই এবার এসপার ওসপার।"
দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, "বলাগড়ে যা চলছে দলের নেতারা সবাই সব কিছু জানে, তবু কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ধৃতরাষ্ট্রের মতো চোখ বুজে আছে। এদের উপরে ভরসা না করে, মনে হচ্ছে এবার আমার লড়াই আমাকেই নিজে লড়ে নিতে হবে। এতে হারবো না জিতবো তা জানিনা, তবে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালাবো না সেই গ্যারান্টি রইলো।"
তাঁর কথায়, "লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচাতে চাই। খুব ছোটবেলায় শুনে ছিলাম এই স্লোগান! এখন বুঝতে পারছি এর কোনো বিকল্প নেই।"
নিজের পোস্টে এক শিক্ষিকার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। বিধায়ক বলেন, "যে স্কুলে কোনও পদ ছিলো না, কোলকাতার বাবুর সহায়তায় সেখানে একটা পদ সৃষ্টি করে ১৭ সালে চাকরিতে যোগ দেয়। দীর্ঘ চার-পাঁচ বছর একজন শিক্ষিকা হয়ে, একদিনও ডিউটি না করে, কেমন করে মাইনে পেল সেটা অভিজিত গঙ্গোপাধায়ের (বিচারপতি) কাছে থেকে আমি জেনে নেবো।"
উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি সিপিআইএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর ডাকে পূর্ব ঘোষিত ব্রিগেড কর্মসূচি রয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী 'সব অপমানের জবাব' দেওয়ার জন্য কেন এই দিনটিকেই বেছে নিয়েছেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার দলের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা বিশিষ্ট সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন