অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জেরে এই মুহূর্তে হইচই পরে গিয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। লোকসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে। আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এমনই দাবি করলেন। তাঁকে ঘরের শত্রু বিভীষণ বলে উল্লেখ করে কল্যাণকে নিশানা করেছেন অপরূপা। অভিষেকের বিরুদ্ধে কথা বলে কল্যাণ দলবিরোধী কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে আলিপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন জেলার চার লোকসভার সাংসদ, জেলাশাসক-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। বৈঠকের পর বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে সবরকম ধর্মীয় ও সামাজিক জমায়েত, মিটিং-মিছিল ও নির্বাচন বন্ধ রাখা হোক বলে মত দেন অভিষেক। সঙ্গে এও বলেন যে, এটি সম্পূর্ণ ভাবে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত।
কিন্তু অভিষেকের এই মন্তব্যকে মানতে পারেননি শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে নেতা মানি না। যে যার পদে আছে, সেই পদকে সম্মান করি। কিন্তু নেতা বলে মানি না।’ পাশাপাশি অভিষেককে উদ্দেশ্য করে কল্যাণের কটাক্ষ, ‘অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ত্রিপুরা আর গোয়ায় জিতিয়ে দেখাতে পারলে ওঁকে নেতা বলে মানব!’
বুধবার তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের বক্তব্যকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ বলে দাবি করে কল্যাণ বলেছিলেন, ‘দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদটি সর্বক্ষণের। তাই এই পদে যিনি বসেন, তাঁর ব্যক্তিগত মত থাকতে পারে না। আমারও ব্যক্তিগত মত আছে অনেক বিষয়েই। দলীয় শৃঙ্খলার কারণেই তা প্রকাশ্যে বলি না। এই ধরনের মন্তব্য আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারেরই বিরোধিতা করা। রাজ্য সরকারকেই আসলে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।’
অপরূপার অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতের বিরোধিতা করার অর্থ, দলের বিরোধিতা করা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল যে নীতিতে চলে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দলে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, তা শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাতে অথবা সরাসরি তৃণমূল সুপ্রিমোকে বলতে। কিন্তু অভিষেককে নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলে কল্যাণ নিজের অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন