২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতার হাতবদলের পর জঙ্গলমহল অনেকটাই মাওবাদী আতঙ্ক থেকে নিজেকে বের করে এনেছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা তৎপর হয়ে উঠেছে। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম জেলায় একের পর এক মিলছে মাওবাদী পোস্টার। উদ্ধার হয়েছে ল্যান্ডমাইন।
তাৎপর্যের বিষয়, মাওবাদীদের নিশানায় এবার তৃণমূল নেতারা। পোস্টারের হুমকি দেখে জঙ্গলমহলের তৃণমূল নেতারা এখন আতঙ্কে ভুগছেন। আর সেই আতঙ্ক থেকেই পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাইলেন বাঁকুড়ার পাঁচ জন তৃণমূল নেতা।
প্রসঙ্গত, একসময় মাওবাদীদের নিশানায় ছিলেন বাম নেতারা। আতঙ্কে এলাকাছাড়া হন বহু বাম নেতা-কর্মী। সেই সময় জঙ্গলমহলে প্রায়ই তৎকালীন শাসক দলের নেতা-কর্মীদের মৃতদেহ উদ্ধার হত। কম বেশি ৫০০ জন বাম কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছিলেন সেই সময়।
সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি চিত্ত মাহাতো নিজের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর একজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। কিন্তু তাতেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না তিনি। তবে শুধু তিনি নন, রানিবাঁধ ব্লকেরই আরও পাঁচ জন তৃণমূল নেতাও আতঙ্কিত। ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন তাঁরাও, এমনটাই জানা গিয়েছে।
গত ৮ এপ্রিল জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের ডাকা বনধে রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা, বারিকুলের মতো বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় যথেষ্ট সাড়া পড়ে। মাওবাদীদের ফের তৎপর হয়ে ওঠার খবর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তরফে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনকে পাঠিয়ে আগেই সতর্ক করা হয়েছে। মাও তৎপরতা দমনে জঙ্গলমহল সফর করেছেন রাজ্য পুুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। সবমিলিয়ে বহু বছর পর ফের ধীরে ধীরে ফের মাও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জঙ্গলমহলে।
তৃণমূলের অভিযোগ, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার জেরে বিরোধীরাই মাওবাদীদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে। বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা যে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতিতে জড়িত, মাও হুমকির জেরে পুলিশি নিরাপত্তা চাওয়ার মাধ্যমে তা প্রমাণিত হল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন