TMC: খণ্ডঘোষে বিলাসবহুল অট্টালিকা তৃণমূল উপপ্রধানের, তাও আবাস যোজনায় নাম পরিবারের, উঠছে প্রশ্ন

পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের শাঁকারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত বিশাল অট্টালিকাটি তৃণমূলের উপপ্রধান জাহাঙ্গির শেখের।
খণ্ডঘোষে উপপ্রধানের বাড়ি
খণ্ডঘোষে উপপ্রধানের বাড়িছবি - সংগৃহীত
Published on

বাড়ি তো নয়, যেন সাক্ষাৎ অট্টালিকা! দেখে তাক লেগে যাওয়ার উপক্রম। তবে সে বাড়ি কোনও রাজা-বাদশাদের নয়। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের শাঁকারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত বিশাল অট্টালিকাটি তৃণমূলের উপপ্রধান জাহাঙ্গির শেখের। অথচ এত বড় বাড়ি থাকতেও প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনায় রয়েছে উপপ্রধানের বাড়ির চার সদস্যের নাম! খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চিত্রটা কয়েক বছর আগেও ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তখন অট্টালিকার জায়গায় ছিল গোটা তিনেক ভাঙাচোরা ঘর। যা ঘিরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় খণ্ডঘোষ। শাসক দলকে নিশানা করে লাগাতার কটাক্ষে নেমেছে বিরোধীরা, ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে হঠাৎ করেই জাহাঙ্গিরের এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি দেখে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ তাঁদের। এত টাকা আসছে কোথা থেকে, এই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকেই।

তবে একা তৃণমূল নেতা নয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় ৭৩১ নম্বরে নাম রয়েছে জাহাঙ্গির শেখের স্ত্রী সীমা শেখের। এছাড়াও তালিকার ৭৩৪ ও ৫৪৩ নম্বরে রয়েছে উপপ্রধানের দুই ভাই আলমগির ও আজমগিরের নাম। এমনকী উপপ্রধানের সদ্য প্রয়াত বাবা শেখ মহসিনের নামও আছে ওই তালিকার ৭০০ নম্বরে। এঁরা প্রত্যেকেই খণ্ডঘোষের কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা।

অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, গরিব হয়েও আবাস যোজনার বাড়ি পাচ্ছেন না তারা। মাটির বাড়িতে থাকতে হচ্ছে তাদের। কারোর আবার মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। তবুও তাদের নামে আবাস যোজনার বাড়ি আসেনি।

এই প্রসঙ্গে শাঁকারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিউলী খাঁ জানান, আমাকে কোন কাজ করতে দেওয়া হয়নি। পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। উপপ্রধান জাহাঙ্গীর শেখ নিজের খুশি মত সব করেছে। এখানে আমার কোনও ভূমিকাই নেই। এই বিষয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছিলাম।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, গ্রামে একটি পারিবারিক মিষ্টির দোকান রয়েছে জাহাঙ্গিরের। আগে তেমন প্রতিপত্তি না থাকলেও, উপপ্রধান হওয়ার পরে এলাকায় তাঁর দাপট ক্রমশ বাড়তে থাকে। আগে ধানের ব্যবস্থা শুরু করেছিলেন তৃণমূল নেতা। উপপ্রধান হওয়ার পরে সেই ব্যবসাও ফুলেফেঁপে ওঠে।

এই প্রসঙ্গে খণ্ডঘোষের সিপিআই(এম) নেতা বিনোদ ঘোষের দাবি, একশো দিনের কাজে ভুয়ো মাস্টাররোল তৈরি-সহ পঞ্চায়েতে নানা দুর্নীতিতে যুক্ত ওঁরা।

অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা জাহাঙ্গিরের দাবি, আইন মেনেই সব করি। মোটা টাকা আয়করও দিই। আগে চালাঘরে থাকতাম। তখনকার ওই অবস্থা দেখে প্রশাসনের কর্তারা সম্ভবত সরকারি অনুদানে বাড়ি পাওয়ার জন্য আমাদের পরিবারের কয়েকজনের নাম প্রকল্পের আওতাভুক্ত করেছিলেন। বিষয়টি নজরে আসার পরেই বিডিওকে ফোন করে নাম বাদ দিতে বলেছি।

খণ্ডঘোষে উপপ্রধানের বাড়ি
বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের 'রহস্যমৃত্যু'তে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হাইকোর্টে
খণ্ডঘোষে উপপ্রধানের বাড়ি
তথ্য লোপাটের চেষ্টা! CBI-এর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুললো লালন শেখের স্ত্রী

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in