নির্বাচনী বন্ড থেকে বিপুল আয় বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের। ২০২১-২২ অথবর্ষে তৃণমূলের মোট আয়ের প্রায় ৯৭ শতাংশই এসেছে কেবলমাত্র নির্বাচনী বন্ড থেকে। কোনও কোম্পানি বা ব্যক্তি নিজের পরিচয় গোপন রেখে এই ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে কোনও রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিতে পারেন।
শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে তৃণমূলের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। গত ৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের তরফ থেকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সই করা অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে তৃণমূল। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তৃণমূলের মোট আয়ের পরিমাণ ৫৪৫ কোটি ৭৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৪৯১ টাকা। এর মধ্যে কেবলমাত্র নির্বাচনী বন্ড থেকেই দলটি পেয়েছে ৫২৮ কোটি ৫২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, যা মোট আয়ের ৯৬.৭৭ শতাংশ। গত বছর যেখানে নির্বাচনী বন্ড থেকে মাত্র ৪২ কোটি ঢুকেছিল দলটির কোষাগারে। অর্থাৎ নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দলটির আয় বেড়েছে ১২৫৬ শতাংশ। চলতি বছর বিধায়ক, সাংসদ ও দলীয় সদস্যদের চাঁদা বাবদ উঠেছে ১৪.৩৬ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থবর্ষে তৃণমূলের মোট আয় ছিল ৭৪ কোটি ৪১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৪৭২ টাকা। এই বছর নির্বাচনী বন্ডের সৌজন্যে যা বেড়ে হয়েছে ৫৪৫ কোটি ৭৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৪৯১ টাকা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় চলতি বছর মমতা ব্যানার্জির দলের আয় বেড়েছে ৭৩৩ শতাংশ। উল্লেখ্য, গত বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন ছিল। এবং নির্বাচনের পর থেকেই গরু পাচার, কয়লা পাচার, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যের শাসকদলের নেতাদের নাম প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান এই দুর্নীতির টাকা শিখণ্ডী সংস্থার মাধ্যমে তৃণমূলের কোষাগারে ঢুকেছে।
রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর খরচও বেড়েছে তৃণমূলের। ২০২০-২১ সালে যেখানে দলটির খরচ ছিল ১৩২.৫২ কোটি টাকা, ২০২১-২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৬৮.৩৩ কোটি টাকা।
এখনো পর্যন্ত পাঁচটি রাজনৈতিক দলের - সিপিআইএম, কংগ্রেস, বিএসপি, তৃণমূল এবং ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি - অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। বিজেপির অডিট রিপোর্টের হিসেব এখনো ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়নি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কংগ্রেসের মোট আয় ৭৫ কোটি ৮৪ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। নির্বাচনী বন্ড থেকে দলটি পেয়েছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা। সিপিআইএমের নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রাপ্ত টাকার পরিমাণ শূন্য। কারণ সিপিআইএম প্রথম থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর এভাবে টাকা তোলার বিরোধিতা করে এসেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন