পাহাড় প্রিয় ভ্রমণপিপাসুদের ট্রাভেল ডেস্টিনেশন দার্জিলিং ও টয়ট্রেন। বাংলার কাছে টয়ট্রেন ঐতিহ্যবাহী সম্পদ, আবেগ। এবার এই টয়ট্রেনেরই বেসরকারিকরণ করতে চলেছে কেন্দ্র। স্বাভাবিকভাবেই এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পাহাড় তথা বঙ্গবাসী, রাজনৈতিক মহলের একটা অংশও। অনেকেই বেসরকারিকরণের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানান, অনেকে সক্রিয় আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছেন। উদ্দেশ্য একটাই। টয়ট্রেনের বেসরকারিকরণ রুখে দেওয়া।
ন্যাশনাল মানিটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্পের অধীনে সড়ক, বন্দর, রেল, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ, কয়লার মতো দেশের লাভজনক সম্পত্তির বেসরকারিকরণ হতে চলেছে। এই প্রকল্পের অধীনেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী টয়ট্রেনের তত্ত্বাবধায়ক দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে।
এদিকে পর্যটকদের আশঙ্কা টয়ট্রেনের বেসরকারিকরণে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাবে তা নিয়ে। একেই করোনার জেরে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ টয়ট্রেন পরিষেবা। সেই ক্ষতিই কীভাবে কাটানো যাবে, তারই সমাধান সূত্র মিলছে না। তারই মধ্যে এনএমপির তালিকায় ঢুকে গেল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের নাম। তবে এসবের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে যে, ইউনেস্কোর শিরোপা পাওয়ার পরেও কি সরকার হেরিটেজ সম্পদের বেসরকারিকরণ করতে পারে?
রাজ্যের প্রাক্তন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, 'খুবই দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত। টয়ট্রেনের সঙ্গে দার্জিলিং ও বাংলা তথা এই দেশের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। এর বেসরকারিকরণ হওয়ার পর তা সাধারণ মানুষের হাতের বাইরে চলে যাবে।'
প্রাক্তন গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান অনিত থাপা জানান, টয়ট্রেনের বেসরকারিকরণের বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে রয়েছে গোটা পাহাড়বাসী। অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজার্ভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু জানান, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েকে বেসরকারিকরণ করলে তার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এর ফলে পর্যটন ধাক্কা খাবে।
যদিও এই বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে মত প্রকাশ করে ইন্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশিস মৈত্র বলেন, 'বেসরকারিকরণ হলেও সেক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না। উল্টে টয়ট্রেন পরিষেবার মান উন্নয়ন হবে বলে মনে হয় আমার।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন