একাধিক দাবি নিয়ে ফের পথে নামলেন আদিবাসীরা। শনিবার সকাল থেকেই পাঁচ রাজ্যে তাঁরা রেল ও রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। এর জেরে ইতিমধ্যে একাধিক ট্রেন বাতিলও হয়েছে। যার ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে নিত্যযাত্রীরা।
আদিবাসীদের একটি সংগঠন 'আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান'-র ডাকে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে ঝাড়খন্ড, বিহার, উড়িষ্যা, অসম ও পশ্চিমবঙ্গ এই পাঁচটি রাজ্যে। পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব রেলে এই অবরোধের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। ডাউন শতাব্দী এক্সপ্রেস সামসি স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে। কুলিক এক্সপ্রেস কুমারগ্রাম স্টেশনে, তেভাগা এক্সপ্রেস একলাখি স্টেশনে এবং গৌড় লিংক মালদা স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে বলে জানা গেছে।
মালদার আদিনা স্টেশন দিয়েই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাওয়ার কথা রয়েছে। অবরোধের ফলে ব্যাহত হতে পারে সেই পরিষেবাও। বাতিল হয়েছে টাটানগর-দানাপুর এক্সপ্রেস। ঘুর পথে চলছে বিলাসপুর-পাটনা এক্সপ্রেস, মুম্বাই-হাওড়া মেল এবং আনন্দবিহার-পুরি এক্সপ্রেস। খড়্গপুর এবং আদ্রা ডিভিশনে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করেছে রেল। বাতিলের তালিকায় রয়েছে খড়গপুর-টাটানগর-খড়গপুর স্পেশাল প্যাসেঞ্জার, হাওড়া-বারবিল-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস, চক্রধরপুর-গোমো-চক্রধরপুর মেমু এক্সপ্রেস, টাটানগর-আসানসোল প্যাসেঞ্জার স্পেশাল এবং টাটানগর-চক্রধরপুর-টাটানগর প্যাসেঞ্জার স্পেশাল, হাওড়া-তিতলাগড় ইস্পাত এক্সপ্রেস।
রেলের আধিকারিকদের সাথে আলোচনা করে বেশ কয়েকটি জেলায় রেল অবরোধ উঠে গেলেও শুরু হয়েছে চাক্কা জ্যাম। পূর্ব বর্ধমানের জৌগ্রাম, পুরুলিয়ার আদ্রা, মালদার আদিনা, পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি স্টেশন অবরোধ করা হয়। পাশাপাশি সেইসব স্টেশনে বাইরে সংগঠনের পক্ষ থেকে রাস্তা অবরোধও করা হয়।
সংগঠনের দাবি, পরেশনাথ পাহাড়ের পরেশনাথ মন্দির তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হবে। বর্তমানে ওই মন্দিরটি ভিন্ন সম্প্রদায়ের অধীনে রয়েছে। তারা এও দাবি করেছে, হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন বা খ্রীস্টান কোনো ধর্মের মধ্যে তারা নেই। তারা প্রকৃতির পূজারি। সেই ধর্মের নাম হল সারনা ধর্ম। তাই কেন্দ্রকে অবিলম্বে সারনা ধর্ম কোড দিতে হবে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, 'সারনা ধর্ম তাদের সাংবিধানিক অধিকার। বহুবার আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা রূপায়িত হয়নি। আমাদের ঈশ্বর মারাংবুরুকে আমাদের কাছে থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।' দাবি না মানা হলে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদিবাসী সংগঠন।
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের নেতা মোহন হাঁসদা বলেন, আমাদের বাকি দাবিগুলি হল আসাম, আন্দামানের আদিবাসীদের উপজাতি তালিকাভুক্ত করতে হবে। ঝাড়খন্ডে রাজভাষা সাঁওতালি চালু, যোগ্য আদিবাসীদের উপজাতি তালিকায় নথিভুক্ত করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন