স্বচ্ছ সিআরআই রিপোর্ট প্রকাশের দাবিতে আদিবাসীদের ডাকা ১২ ঘন্টার বাংলা বনধে কার্যত অচল জঙ্গলমহল সহ একাধিক জেলা। এরপরেও রাজ্য সরকার তাঁদের দাবি পূরণ না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথ বেছে নেবেন তাঁরা। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনের নেতারা। তাঁদের মূল অভিযোগ কুড়মিরা আদিবাসীদের ইতিহাস বিকৃত করছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জঙ্গলমহলসহ একাধিক জেলায় বনধ পালন করছে আদিবাসীরা। ১২ ঘণ্টার বনধে জেলায় জেলায় ব্যাহত হয়েছে যান চলাচল। ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের বিভিন্ন রাস্তায় অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। রাজ্য ও জাতীয় দুই সড়কই অবরোধ করা হয়েছে। যার ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নিত্যযাত্রীরা। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, মানুষের অসুবিধা হবে ঠিকই। কিন্তু আমরা পথে না নামলে সরকার আমাদের কথা শুনবে না। কুড়মিদের অনৈতিক দাবির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।
ঝাড়গ্রামের কোর্ট রোড, সবজি মার্কেট, জুবিলি মার্কেটে অন্যদিনের তুলনায় মানুষের সংখ্যা অনেক কম। বাঁকুড়া-কমলপুর, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর এবং বাঁকুড়া-রানিবাঁধ রাজ্য সড়কও অপরাধ করেছে অদিবাসীরা। বীরভূমের দুবরাজপুর-সিউড়ি ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কেও অবরোধ হয়। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও বনধের আঁচ গিয়ে পড়ে। মালদহের একাধিক সড়ক, শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়াতেও জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে আদিবাসীরা।
আদিবাসী যৌথ মঞ্চের সেক্রেটারি রমেশ কিস্কু বলেন, 'আমরা বাধ্য হয়েছি এই বনধ ডাকতে। এর কারণ হচ্ছে অ-আদিবাসী কুড়মিরা আদিবাসীদের ইতিহাস বিকৃত করছে। অনৈতিকভাবে সরকারি মদতে সিআরআই রিপোর্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে এসটি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্যজুড়েই আমরা পথে নেমেছি। আর আগামীদিনে যদি আমাদের দাবি পূরণ না হয় তাহলে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো'।
প্রসঙ্গত, কুড়মিরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন তাঁদেরকে এসটি তালিকাভুক্ত করার দাবি নিয়ে। একাধিকবার রেল সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি তাঁদের। তাঁদের দাবি, অনেকে আদিবাসী পরিচয় দিয়ে এসটি তালিকাভুক্ত হচ্ছে। সিআরআই রিপোর্ট যাচাই করে তাঁদেরও এসটি তালিকার আওতায় আনতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন