বিহারের রাজনীতিতে বড়সড় পরিবর্তন ঘটতে না ঘটতেই বঙ্গ রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গ ছাড়তে চাইলেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পবন ভার্মা। শুক্রবার নিজস্ব ট্যুইট বার্তায় মমতা ব্যানার্জীকে ধন্যবাদ জানিয়ে দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
রাজ্য জুড়ে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় জর্জরিত শাসক দল তৃণমূল। দলের হেভিওয়েট দুই নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে পবন ভার্মার মত প্রবীণ নেতার দলত্যাগ তৃণমূলের জন্য যথেষ্ট বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর উদ্দেশ্যে করা ট্যুইটে পবন জানান, "প্রিয় মমতাজি, অনুগ্রহ করে তৃণমূল থেকে আমার ইস্তফা গ্রহণ করুন। আপনি আমাকে যে সৌজন্য দেখিয়েছেন এবং দায়িত্ব দিয়েছেন সেজন্যও আপনাকে ধন্যবাদ। আমাকে দলে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো এবং আপনার সমর্থনের জন্যও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যোগাযোগের অপেক্ষায় রইলাম। আপনাকে শুভকামনা জানাই।" যদিও ইস্তফা দেওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণই ট্যুইটে উল্লেখ করেননি পবন ভার্মা।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে জেডিইউ ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন বিহারের প্রাক্তন সাংসদ তথা অবসরপ্রাপ্ত আইএফএস অফিসার পবন ভার্মা। মমতা ব্যানার্জীর হাত ধরেই ঘাসফুল শিবিরে আসেন তিনি। স্বয়ং মমতা ব্যানার্জী উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে দলে স্বাগত জানিয়েছিলেন। এরপর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান পবন। এমনকি ঘাসফুল শিবিরে যোগদানের পর মমতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি গোয়ায় সংগঠন আরও দৃঢ় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছিলেন তিনি।
তাহলে দলে যোগ দেওয়ার ১০ মাসের মধ্যে হঠাৎ এই মোহভঙ্গ কেন? তবে কী ফের জেডিইউ-তে যোগ দিতে চলেছেন পবন? নাকি একের পর এক দুর্নীতিতে দলের নাম জড়ানোতে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রাতারাতি দলত্যাগের সিদ্ধান্ত? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।
উল্লেখ্য, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে জেডিইউ-তেই ছিলেন পবন। ২০১৭ সালে বিজেপির সাথে জেডিইউ-র জোট মানতে না পারায় এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরোধিতা করায় ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি প্রশান্ত কিশোর এবং পবন ভার্মাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল জেডিইউ। মূলত সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের পর থেকে পিকে-র ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন পবন। ভুটান ও সাইপ্রাসে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন এই প্রাক্তন কূটনীতিবিদ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন