পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছে পুলিশ! এমনই অভিযোগ করেছে পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের সিপিআইএম প্রার্থীরা। তারা এও দাবি করেছে তৃণমূলের মদতেই এই কাজ করছে প্রশাসন। যদিও পুলিশ সমস্ত অভিযোগ মানতে নারাজ।
রাজ্যের একাধিক জেলাতেই বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের দাবি, বাড়ি ভাঙচুর, আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানো সমস্ত কিছুই করছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা। তবে অন্ডালের ঘটনাটি একটু আলাদা। ওই এলাকায় খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা। তাদের অভিযোগ, অম্বিকা ঘোষ হলেন ক্ষেতিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের ১৮ নম্বর আসনের সিপিআইএম প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য শনিবার রাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। তাঁর স্বামী বিপ্লব ঘোষকেও ব্যাপক মারধর করে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। পরে তাঁকেই (বিপ্লব ঘোষ) বিনা কারণে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সিপিআইএম কর্মীরা আরও জানাচ্ছেন, শুধু তাই নয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের মারধরে গুরুতর জখম হন ওই প্রার্থীর স্বামী। চিকিৎসার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতাল থেকেই রাত ২টোর সময় দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। বুধবার আদালতে তোলা হবে বিপ্লব ঘোষকে। ঘটনার প্রতিবাদে সিপিআইএম-র তরফ থেকে পথ অবরোধও করা হয়।
শুধু বর্ধমানই নয়, ভাঙড়, জলপাইগুড়ি, হুগলী সহ আরও একাধিক জেলায় সিপিআইএম প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ উঠেছে। ভাঙড়ের বেওতা ২ নং গ্রামপঞ্চায়েতে সিপিআইএম প্রার্থীর অভিযোগ, মনোনয়ন প্রত্যাহারে রাজী না হওয়ায় তাঁর বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। আতঙ্কে ঘরছাড়া রয়েছেন তিনি।
জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১৯ নং বুথের সিপিআইএম প্রার্থী পায়েল রাজবংশী এবং ২০৮ নং বুথের সিপিআইএম প্রার্থী দীপক রায়ের স্ত্রীকেও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এখানেও অভিযোগের তির শাসকদলের বিরুদ্ধে। পায়েল রাজবংশীর স্বামীকে ব্যবসা বন্ধেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আবার হুগলীর আরামবাগ, খানাকুল, গোঘাটেও সিপিআইএম প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেই অভিযোগ উঠছে। সিপিআইএম-র অভিযোগ, এলাকাজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য প্রার্থীদের মারধর ও ভয় দেখানো হচ্ছে। মধ্যরাতে বাড়ির মধ্যে ঢুকে মহিলাদেরও হুমকি দিচ্ছে শাসক দলের দুষ্কৃতিরা।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন মঙ্গলবার (২০ জুন) অর্থাৎ আজই। শেষ দিনে জেলাগুলি কতটা শান্ত থাকে সেটাই দেখার। তৃণমূলের পক্ষ থেকে যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, বিরোধীদের কাছে মানুষের সমর্থন নেই সেই জন্যই মিথ্যা অভিযোগ করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন