কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে রবিবার ব্লকে ব্লকে পালিত হয় তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি ঘিরেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। দলীয় কর্মীদেরই একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং জ্যোৎস্না মান্ডি। কোথাও দলীয় কর্মীদের মারে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে ব্লক সভাপতিকে। সমস্ত ঘটনায় শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে সিপিআইএম। তবে পুরো বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি বাতিল হয়। তারপরই নবান্ন থেকে ৬ অগাস্ট ব্লকে ব্লকে তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল গোটা রাজ্যে পালিত হয় কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে এই ধর্না কর্মসূচি। ওই কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বালিগঞ্জ ও বাঁকুড়ায়। বালিগঞ্জে বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন দলীয় কর্মীদের একাংশ।
তাঁদের অভিযোগ, বাবুল সুপ্রিয় খারাপ ব্যবহার করেছেন কর্মীদের সাথে। নীচু তলার কর্মীদের সম্মানই দেননি। মূলত কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখার্জি (প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জির বোন) ও বাবুল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বচসা বাঁধে। কিন্তু পুরো বিষয়টি নিয়ে বাবুল সুপ্রিয় কোনো মন্তব্য করেননি।
কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকা স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার দাবি, চেয়ারে বসা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। মঞ্চে বাবুল উঠতে তাঁকে চেয়ার দেন সুদর্শনা। কিন্তু বাবুল সেই চেয়ারে না বসে খারাপ ব্যবহার করেন। বাবুলের অনুগামীদের পাল্টা দাবি, সুদর্শনাই বচসা শুরু করেন।
বালিগঞ্জে কেবল বচসাতেই সীমাবদ্ধ থাকলেও, বাঁকুড়াতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। এমনকি ওই ব্লকের তৃণমূল সভাপতিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বাঁকুড়ার খাতড়ার করালি মোড়ে ধর্না কর্মসূচি চলছিল। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত মহাপাত্র সহ একাধিক তৃণমূল নেতা। হঠাৎই ব্লক সভাপতিকে বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী মারধর শুরু করে। যারা মন্ত্রীর অনুগামী বলেই পরিচিত। সংবাদ মাধ্যমে এই হাতাহাতির দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
যদিও জ্যোৎস্না মান্ডি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিজেদের ব্লক সভাপতিকে কেন মারতে যাব? মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করেছেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৃণমূল আদৌ লড়তে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এরা দলীয় বঞ্চনা নিয়েই লড়তে ব্যস্ত। যার বখরায় টান পড়েছে সে গিয়ে মারধর করছে। এ আবার নতুন কী?'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন