মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে ‘সারদার মা’ –এর আরেক রূপ। পুনর্জন্ম হয়েছে তাঁর, এমন মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি। বিরোধী দল থেকে শুরু করে, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পক্ষ থেকেও এর প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। তাঁরা সকলেই নিন্দা করেছেন নির্মলের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে। তবে কিছুতেই নিজের মন্তব্য থেকে নড়ছেন না নির্মল। এই বিষয়ে আরও নতুন যুক্তি খাড়া করেছেন তিনি।
গতকাল (৩০শে জুন), সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিধায়ক নির্মল মাজি বলেন, "আমি মনে করি আমার কাছে মা সারদা, মাদার টেরেজা, ভগিনী নিবেদিতা, আমার চেতনা, চৈতন্য, আবেগ সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।" ইতিপূর্বে তাঁর বক্তব্যে উঠে আসা অসঙ্গতি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, সোমবার কলকাতার একটি প্রকাশ্যে জনসভায় নির্মল মাজি, মুখ্যমন্ত্রীকেই 'মা সারদা' বলে দাবি করেছিলেন। তবে এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও একটি গল্পের কথা উল্লেখ করেন, মৃত্যুর কয়েকদিন আগে স্বামী বিবেকানন্দর কয়েকজন সতীর্থকে মা সারদা বলেছিলেন, তিনি নাকি পরে কালীঘাট এলাকায় নবরূপে জন্ম নেবেন। তারপর ত্যাগ, তিতিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞে কাজে যুক্ত হবেন। নির্মল মাজির এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, মাজির এই বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। এরম কোন তথ্য মিশন কতৃপক্ষ সত্য বলে গ্রাহ্য করে না। মিশন কঠোর ভাবে জানিয়েছেন, যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। 'মা সারদা'র সম্পর্কে এহেন বক্তব্য সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী, ভক্তবৃন্দ ও অগণিত মানুষের মনে আঘাত দিয়েছে।
তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যে উঠে এসেছে এক আধ্যাত্মিক পুরুষের কথা। তিনি বলেন, "একজন আধ্যাত্মিক পুরুষ আমাকে বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যেই রয়েছেন মা সারদা। আমি সেই আধ্যাত্মিক পুরুষকে বিশ্বাস করি। দেহ ত্যাগের আগে মা সারদা তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন দক্ষিণ কলকাতায় মানবী রূপে জন্মগ্রহণ করবেন তিনি এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নেবেন। সেই ভবিষ্যৎবাণী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তিনিই হলেন মা সারদার পুনর্জন্ম।" এই মন্তব্যের পরই নির্মল মাজিকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
উল্লেখ্য, সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন - "নির্মল মাজির সেবন একটু বেশী হয়ে গেছে, বড্ড বেশামাল কথা হচ্ছে"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন