জয়নগরে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি খুনে 'বদলা' নিতে একের পর এক সিপিআইএম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে চললো 'তাণ্ডব'। পুড়ে ছাই একাধিক নথি ও আসবাবপত্র। ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়িতে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।
সোমবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে খুন হন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাইফুদ্দিন লস্কর। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিআইএম আশ্রিত দুষ্কৃতিরা খুন করেছে সাইফুদ্দিনকে। তারপরই ঘটনাস্থল থেকে ৫ কিমি দূরে অবস্থিত দলুয়াখাকি গ্রামে বেছে বেছে সিপিআইএম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। বাচ্চাদের সাইকেল থেকে শুরু করে বাড়ির আলমারি, গোয়ালঘর সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আক্রান্ত এক সিপিআইএম সমর্থক জানান, পুলিশের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা। সকালে পুলিশ এসেছিল গ্রামে। সেই সময়ই ৩০০-৪০০ জন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা এসে মারধর শুরু করে এবং বাড়ির ভিতর রড, শাবল, লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালায়। পরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। টাকা পয়সা সব লুঠ করে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, দমকল আসতে অনেক দেরি করেছে। শুনলাম গ্রামে ঢোকার রাস্তায় দমকলকে আটকানো হয়েছিল। তৃণমূল কর্মীরা বার বার বলছিল ওরা (সিপিআইএম সমর্থকরা) আগুনে পুড়ে যাক। বাড়ির বাচ্চাদেরও ছাড়েনি তারা। বহু মহিলা আক্রান্ত হয়েছে।
দমকল কর্মীরাও গ্রামে ঢুকতে বাধা পাওয়ার কথা স্বীকার করে নেন। দমকলের এক আধিকারিক জানান, আমাদের গ্রামে আসতে দেরি হওয়ার একটাই কারণ বাধাদান। উত্তেজিত জনতা গ্রামের মধ্যে গাড়ি ঢুকতেই দিচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে অন্য পথ দিয়ে আসতে হয়। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে।
সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'বগটুইয়ের স্মৃতি ফিরলো দলুয়াখাকিতে। জয়নগরের সব জায়গায় তৃণমূল। সিপিআইএম-র পায়ের তলায় মাটি নেই সেখানে। ওই গ্রামে সিপিআইএম আছে। তাই সেটাও শেষ করতে চাইছে তৃণমূল। সেই কারণেই একটা গ্রামকে ঘিরে ধরে ১৪-১৫টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হলো। গ্রামের মহিলা থেকে শুরু করে শিশুদের ওপরও অত্যাচার চালালো। পুলিশ সব জানে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি'।
ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একাধিক মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। দ্রুত তদন্ত এগোচ্ছে। সিআইডিরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন