নন্দীগ্রামে নাটকীয় কাণ্ড। মমতা ব্যানার্জির নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানকে প্রথমে টিকিত দেওয়া হলেও পরে সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হলো তৃণমূল কংগ্রেস। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই কার্যত নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে শাসক দল। জেলাপরিষদের নতুন প্রার্থী হলেন সামসুল ইসলাম।
শেখ সুফিয়ানের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নন্দীগ্রামে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলেরই অন্দরে। এমনকি দলীয় কার্যালয়ে তালায় ঝুলিয়ে দেন সুফিয়ান বিরোধী তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, নব জোয়ারের ভোটে সুফিয়ান পেয়েছিলেন ৭টি ভোট তৃণমূলের অন্য এক নেতা সামসুল ইসলাম পেয়েছিলেন ৭১টি ভোট। স্বাভাবিকভাবেই সুফিয়ানের টিকিট পাওয়ার কথাই নয়। এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামে পৌঁছায় কুণাল ঘোষ। তিনি বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের সাথে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। পরে মমতা ব্যানার্জির অনুমোদন নিয়েই নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।
জেলা পরিষদের নতুন প্রার্থী হলেন সামসুল ইসলাম। সামসুল ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, নন্দীগ্রামে কেউই সুফিয়ানকে চাইছে না। সুফিয়ান কেবল মিডিয়াতে ভেসে থাকতে চান। আর সামসুল ইসলাম নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনে লড়াই করেছিলেন। ফলে মানুষ সামসুল ইসলামকেই চাইছে।
নন্দীগ্রামে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে বলে সুফিয়ানের সাথেও কথা বলেন কুণাল ঘোষ। তারপরই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বৃহস্পতিবার শেখ সুফিয়ান বলেন, 'আমি তৃণমূলের এক জন সৈনিক। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি নিষ্ঠার সাথে পালন করেছি। নির্বাচনের টিকিট না পেলেও দলের কাজ করে যাব।'
এই সুফিয়ানই নন্দীগ্রামের ভোট পরিচালন কমিটি থেকে বাদ পড়ার পর দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমরা পুরনো কর্মী। দলের যখন প্রয়োজন ছিল আমাদের ব্যবহার করেছে। নন্দীগ্রামে যখন তৃণমূল ছিল না তখন আমরা ছিলাম। এখন অনেকে নতুন করে আসছে দলে। এর থেকে বেশি কিছু বলার নেই। তাঁর ঘনিষ্ঠরাও নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা করেছিলেন। সুফিয়ান ঘনিষ্ঠরা সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনের মধ্যে ১০টি, কেন্দেমারি পঞ্চায়েতের ২২ আসনের মধ্যে ১৯টি এবং দাউদপুরের ১৭টি আসনেই মনোনয়ন জমা দেন। সুতরাং নন্দীগ্রামে শাসকের অবস্থা যে খুব স্বস্তির তা একেবারেই বলা যাবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন