গোপনে শপথ নিলেন বাদশা! এসডিওর দফতরে মহকুমাশাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস তাঁকে নিজের ঘরে গোপনে শপথবাক্য পাঠ করান। তার আগে গত ১৬ মার্চ বর্ধমান পুরসভায় তৃণমূল চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান-সহ মোট ৩৩ জন কাউন্সিলর শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন বাদশাকে সামনে আনা হয়নি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বাদশা শপথ নিয়েছে বৃহস্পতিবার। শনিবার তা বর্ধমান শহরের লোক জানতে পারেন। তাঁর জন্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছিল। প্রশাসনের এই ভূমিকার তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন তুহিনার পড়শিরা।
এবার প্রশ্ন কে এই বাদশা? বর্ধমানের কলেজছাত্রী তুহিনা খাতুনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তুহিনাদের বাড়ির আগে দেওয়ালে তিনটি মেয়ের গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ছবি আঁকার অভিযোগ উঠেছিল বাদশার নেতৃত্বে। এমনই অভিযোগ করেছিল তুহিনার পরিবার।
পুরসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিন বাদশা ও তাঁর দলবল তুহিনার বাড়িতে ঢুকে মানসিকভাবে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। এরপরে বাধ্য হয়ে তুহিনা আত্মহত্যা করে এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর দিদি কুহেলি বিবি। শুধু তাই নয়, ওইদিনের ঘটনার পর তাঁদের দুই বোনকে ঘর থেকে টেনে বের করে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তুহিনার মৃত্যুর জন্য মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাঁর পরিবার। তার মধ্যে মাত্র পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত বাদশার কিছু করতে পারেনি। এখনও পুলিশের দাবি বাদশাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও তাঁকে এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। মহকুমাশাসকের কাছে তুহিনার পরিবার জানতে চেয়েছে যে যিনি কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নিয়েছেন আর তুহিনার মৃত্যুতে অভিযুক্ত হিসেবে যার নাম উঠে এসেছে, দুজন একই ব্যক্তি কিনা!
বাদশার হুমকি ও অত্যাচারে গত দুমাস ধরে ঘরবন্দি তুহিনার পরিবার। ১৫ দিন টানা পানীয় জল বন্ধ করে দেওয়া হয় তাদের। তিন বোনের ছবি আঁকা হয়। পুলিশকে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। কিন্তু সেই সময় পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।
কুহেলি বিবির প্রশ্ন কীভাবে পুলিশের ওপর ভরসা করবো বলুন তো? বাড়ির সামনে কুরুচিপূর্ণ ছবি আঁকা হল। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা মুছে দিতে বলা হল। কিন্তু তা না হয়ে ছবি যেমন ছিল, তেমনই রয়ে গেল। ভোটের ফলপ্রকাশের দিন লুটের ভোটে জিতল বাদশা। বিজয় মিছিল হল। বাজনা বাজিয়ে নাচ-গান করে আমাদের ঘরে ঢুকে বোনের চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে মারধর করল। শ্লীলতাহানি করল। এরপর ঘরের দরজা দিয়ে আত্মহত্যা করল বোন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন