দু-মাস পর বর্ধমানের কলেজ ছাত্রী তুহিনা খাতুনের আত্মহত্যার ঘটনায় আদালতে চার্জশিট পেশ করল বর্ধমান জেলার পুলিশ। গত মার্চ মাসে পুরোভোটের ফল প্রকাশের পর আত্মঘাতী হয় ঐ তরুণী। ঘটনাটি ঘটে বর্ধমান জেলার বাবুরবাগ এলাকায়। ঘটনায় নাম জড়ায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বসির আহমেদের নাম। বৃহস্পতিবার বসির আহমেদ সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করল পুলিশ।
এই চার্জশিটের মধ্যে তুহিনার প্রেমিক শেখ সহেলের নামও যোগ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৫, ৩১৩, ৩৭৬(২) ও পকসো আইনের ৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪৭, ১৪৯, ৪৪৭, ৩২৩, ৩০৫, ৩৫৪, ৫০৬, ৫০৯ ও পকসো অ্যাক্টের ৮ ও ১২ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
সূত্রের খবর, ঐ তরুণীর প্রেমিকের নাম পুলিশ সাজিয়ে যোগ করেছে বলে এমনটাই শোনা যাচ্ছে। চার্জশিটে কাউন্সিলর সহ যে ৯ জন ধরা পড়েনি তাদেরকে পলাতক দেখানো হয়েছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ঐ 'পলাতক'দের কাউন্সিলরের সাথে ঘুরতে দেখা গেছে। শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ করছে না।
বাদশা, শেখ গোলাম নবি, তহমিনা বিবি, মানোয়ারা বিবি, শেখ রাজা, শেখ তুফান এদের নাম থাকলেও অনেকেই অধরা রয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তকারী অফিসারকে কার্যত ভর্ৎসনা করলেন বিচারক। তদন্তকারী অফিসার জানান, পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা খুব শীঘ্র ধরা পড়বে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
পুলিশ চার্জশিটে জানায়, গত মার্চ মাসে পুরোভোটে জেতার পর থেকেই ঐ তরুণীকে অশ্লীল কটুক্তি করা হয়। পরিবারের দাবি তুহিনা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এইসব কারণেই আত্মঘাতী হয় তুহিনা। চার্জশিটে প্রেমের তথ্য উল্লেখ করা আছে। বিরোধীদের দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে বাঁচাতেই পুলিশ প্রেমিকের নাম যুক্ত করেছে। কারণ মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রেমিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এফআইআর এর কপিতেও প্রেমের বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন