তন্ত্র সাধনার জন্য কি জিভ কাটা হল? এটাই এখন প্রশ্ন শান্তিনিকেতন থানার ফুলডাঙা আদিবাসী গ্রামে। সোমবার রাত্রে এই গ্রামের বছর কুড়ির সমাই সোরেন বলে এক যুবকের জিভ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই গ্রামেরই দুই মহিলার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত এক মহিলা তন্ত্র সাধনা করেন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। সে জন্যই ওই যুবকের জিভ কেটে নেওয়া হয়েছে। এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় সূত্রের খবর সোমবার রাত্রি আটটা নাগাদ সমাই আর তাঁর বন্ধু মুকুল মুর্মু অভিযুক্তের বাড়িতে মদ্যপান করতে যান। মুকুল মুর্মু জানান, “কোনদিন আমাদের মদ খেতে ডাকেনি। কালকেই ডেকেছিল। ওরাই টাকা দিয়েছিল মদ আনার জন্য। মদ খেতে খেতে একসময় আমি বাইরে বাথরুম করতে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি সামাই-এর বুকের উপর চেপে ওর জিভ কাটছে। কোনমতেই ওকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাইরে পালিয়ে যাই।"
গ্রামবাসীদের অভিযোগ ওই বাড়ির মহিলা পাকুর টুডু এবং তাঁর মেয়ে ওই যুবকের জিভ কেটেছে। স্থানীয় বাসিন্দা কমল সোরেন অভিযোগ করেন, “পাকুর টুডুর বয়স ৫০। ও তান্ত্রিকের মতো কাজ করে। ওই সবের জন্যই ও জিভ কেটেছে। চিবিয়ে খেয়েও নিয়েছে শুনেছি। ওদের ঘরের মন্দিরের মধ্যে কেটেছে, তাই আমরা আশঙ্কা করছি যে তন্ত্র সাধনাতে বলি দেবার জন্য হয়তো জিভ কেটেছে। গ্রামের কারোর সঙ্গে ওদের কোন সদ্ভাব নাই।”
এদিকে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আহত সমাইকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্যে। সেখান থেকে কলকাতায় পিজি-তে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে পরিবারের লোকজন তাঁকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
এখন গ্রামে টাকা সংগ্রহের কাজ চলছে তাঁর চিকিৎসার জন্য। ঘটনার খবর দেওয়া হয় শান্তিনিকেতন থানাতেও। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তাঁরা। এদিকে অভিযুক্ত বৃদ্ধা গ্রামবাসীদের তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাকুর টুডুকে আটক করেছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন