করোনা আবহে এবছরের মে মাসে লকডাউনে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল হয়। কিন্তু ট্রেন পরিষেবা এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি। যদিও ট্রেন চলছে সবই স্টাফ স্পেশাল নামে। প্রথমদিকে সাধারণ মানুষ টিকিট পেতেন না। শুধু এমার্জেন্সি সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত মানুষ যাতায়াত করতে পারতে শর্তসাপেক্ষে। কিন্তু পরে সবাইকে টিকিট দেওয়া শুরু হয়। ফলে ট্রেনে ভিড় বাড়তে থাকে।
দুর্গাপূজা কাটিয়ে আজ থেকে বিভিন্ন অফিস খুলে যাচ্ছে। শহরতলী থেকে মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যেখানে ট্রেনই ভরসা, সেই ট্রেনের সংখ্যা নেহাৎই কম। ফলে আজ থেকে ফের ট্রেনে ভিড় বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন রেল কর্তারা। যাত্রীরাও লোকাল ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবি তুলেছেন। এখন সবটাই নির্ভর করছে নবান্নের সিদ্ধান্তের উপর।
রেল কর্তাদের দাবি, শুধু স্টাফ স্পেশালে যাত্রীদের চাপ সামলানো যাচ্ছে না। হাতেগোনা কিছু ট্রেনের তুলনায় যাত্রীসংখ্যা অনেক। তাঁরা চান, পরিস্থিতি বিচার করে লোকাল ট্রেন স্বাভাবিক করা হোক। সংশ্লিষ্ট কর্তাদের বক্তব্য, স্টাফ স্পেশালগুলিতে অস্বাভাবিক ভিড় হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না। লোকাল ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হলে ভিড় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
সূত্রের দাবি, করোনার আগে শিয়ালদা ডিভিশনে সারাদিনে ৯২০টি লোকাল ট্রেন চলত। এখন ৬৬ শতাংশ স্টাফ স্পেশাল অর্থাৎ গোটা দিনে ৬১০টি লোকাল চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদে খুলে গিয়েছে সব কর্মস্থল। ফলে একটি ট্রেনে ভিড় হচ্ছে অনেক বেশি। যাত্রী বহনের নিরিখে দেশের অন্যতম ব্যস্ত ডিভিশন শিয়ালদা। প্রতিদিন এই ডিভিশনে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ ট্রেনে চড়েন। যার মধ্যে বেশিরভাগই লোকাল ট্রেনের যাত্রী।
রেল কর্তাদের কথায়, শিয়ালদা সাউথ ও মেন শাখায় যাত্রীদের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। যাত্রীরা ঝুলে ঝুলে ট্রেনে যাতায়াত করছেন। অন্যদিকে, আরও এক ব্যস্ত ডিভিশন হাওড়ায় আগে প্রতিদিন ৪৮৮টি লোকাল ট্রেন চলত। কিন্তু এখন সেই সংখ্যা কমে স্টাফ স্পেশাল পরিচয়ে হাওড়া ডিভিশনে চলছে মাত্র ২৬০টি লোকাল। ফল যথারীতি এক।
এই প্রসঙ্গে নবান্নের এক কর্তার বক্তব্য, দুর্গাপুজোর পর করোনা গ্রাফ কী রকম থাকে, তার উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। সর্বশেষ সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত করোনাবিধি জারি রয়েছে। কিন্তু উৎসবের জন্য ১০ থেকে ২০ অক্টোবর একাধিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরমার্শ মেনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন